মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

কৌশলগত অংশীদারিত্ব ফ্রান্সের সঙ্গে : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিদিন ডেস্ক

কৌশলগত অংশীদারিত্ব ফ্রান্সের সঙ্গে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, এটি একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিকে আরও সম্প্রসারিত হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। খবর বাসস

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ফ্রান্স সব সময়ই বাংলাদেশের বিশ্বস্ত অংশীদার। আমাদের টেকসই উন্নয়নের অভিন্ন লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিকে সম্পর্কটি আরও সম্প্রসারিত হয়েছে। ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত পথ অনুসরণ করে গত পাঁচ দশক ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতাসহ দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বৈঠকে ফরাসি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে বিশেষ করে বিমান চলাচল এবং মহাকাশ খাতে সহযোগিতা জোরদারে তার দেশের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, তারা সব সময় বাংলাদেশের সঙ্গে সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিয়েও কাজ করতে আগ্রহী। বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নির্মাণে তাঁর দেশের আগ্রহের কথাও ব্যক্ত করেন ম্যারি মাসদুপুই। বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। জলবায়ু প্রসঙ্গে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত বলেন, তাঁর দেশ জলবায়ু ইস্যুতে কাজ করছে এবং তাঁরা বাংলাদেশের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। কারণ, তারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কক্সবাজারে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর নির্মাণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার বিমানবন্দরটিকে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং রিফুয়েলিংয়ের আন্তর্জাতিক হাব হিসেবে রূপান্তরিত করছে। ২০২১ সালের নভেম্বরে তাঁর ফ্রান্স সফর এবং ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আগামী ২২-২৩ জুন প্যারিসে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু সম্মেলনে যোগদানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ফরাসি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ জটিল সার্জারি পরিচালনার সক্ষমতা অর্জন করেছে : বাসস আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কিডনি প্রতিস্থাপনসহ জটিল সার্জারি পরিচালনার সক্ষমতা অর্জন করেছে।

গতকাল গণভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ দেশ এখন কিডনি প্রতিস্থাপনসহ অনেক জটিল অপারেশন করতে সক্ষম।’ বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, তাঁর সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে স্বাস্থ্যসেবা সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, কিডনি প্রতিস্থাপন রোগী শামীমা আক্তার ও শবনম সুলতানা এবং কিডনিদাতা সারা ইসলামের মা।

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি বিএসএমএমইউ হাসপাতালে অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল ক্লিনিক্যালি মৃত ব্যক্তির কাছ থেকে সংগৃহীত কিডনি দুই রোগীর মধ্যে সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করেন। এটি ছিল দেশে প্রথম ক্যাডেভারিক কিডনি প্রতিস্থাপন।

তারা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকা ২০ বছর বয়সী রোগী সারা ইসলামের কাছ থেকে কিডনি নিয়েছিলেন। ১৮ জানুয়ারি বিকালে তাকে ক্লিনিক্যালি মৃত ঘোষণা করা হয়। সারার মা অপারেশনে সম্মতি দেওয়ার পর কিডনি সংগ্রহ করা হয়।

জীবিত দাতাদের কাছ থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন বাংলাদেশে ১৯৮২ সালে শুরু হয়েছিল। কিন্তু মৃত রোগীর কিডনি নেওয়া আইনত সীমাবদ্ধ ছিল।

২০১৮ সালে অঙ্গ দান আইনটি সংশোধিত হয়, যা সংশ্লিষ্ট আত্মীয়দের সম্মতিতে মৃতদের কাছ থেকে অঙ্গ সংগ্রহের অনুমতি দেয়।

সর্বশেষ খবর