বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফায়ার সার্ভিসে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফায়ার সার্ভিসে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার সার্ভিসে হামলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। যারা লাঠিসোঁটা নিয়ে গেছে তাদের সবাইকে চিহ্নিত করতে বলেছি। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, মামলা দেওয়া হবে। গতকাল সকালে গণভবনে পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারি ঋণ পরিশোধের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ টাকার একটি চেক গ্রহণ করেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রীর হাতে এ চেক তুলে দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতে কেউ যদি ফায়ার সার্ভিসের বা কারও ওপর এ ধরনের আক্রমণ করে বা জনস্বার্থে ব্যবহার করা জিনিসের ওপর আঘাত হানে তাদের কিন্তু ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আমাদের দেশের কিছু লোকের আচরণটা আমাকে খুব ভীত করেছে। যখনই আগুন লেগেছে তখনই ফায়ার ব্রিগেড সেখানে চলে গিয়েছিল আগুন নেভাতে। সেই সঙ্গে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী প্রত্যেকেই সেই সকাল থেকে কাজ করে যাচ্ছিল। এর মধ্যে কথা নেই, বার্তা নেই দুপুরের পরে হঠাৎ কিছু লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে হাজির; তারা একেবারে ফায়ার সার্ভিসের অফিসের ভিতরে ঢুকে কয়েকটা গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে; কতগুলো ভাঙচুর করেছে। সেখানে একটা ভীতকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে এটা কেন? শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যতটা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, পেছন থেকে টানার একটা চেষ্টা আমরা দেখতে পাই। যত বাধাই আসুক বাংলাদেশ যে যাত্রা শুরু করেছে, উন্নয়নের অগ্রগতির, এ গতিটা অব্যাহত রেখে আমরা এগিয়ে যাব।

ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঈদের আগে, রোজার সময় ব্যবসায়ীদের কষ্ট, তাদের কান্না সহ্য করা যায় না। বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। সবচেয়ে কষ্ট লাগে এখানে একবার ১৯৯৫ সালে আগুন লাগে, এরপর ২০১৮ সালে আবার আগুন লেগেছিল। তারপর এখানে আমরা একটা সুপরিকল্পিত মার্কেট করার প্রকল্প নিয়েছিলাম; তখন বেশ কিছু লোক বাধা দেয়। শুধু বাধা দেয়নি, একটা রিটও করে। হাই কোর্ট এটিকে স্থগিত করে দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় যদি এটা স্থগিত না করত তাহলে এখানে হয়তো আমরা একটা ভালো মার্কেট তৈরি করে দিতে পারতাম। এ ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা তখন হতো না। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে বলে দিয়েছি আমরা যতটুকু পারি সাহায্য করব এবং কার কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেটা দেখব।

জনগণ পাশে থাকলে সব প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা সম্ভব : জনগণের সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশ যে কোনো বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি জনগণ আমাদের পাশে থাকলে যে কোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে আমরা এগিয়ে যেতে পারব। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ এর সেরা উদাহরণ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে ঋণ স্থগিত এবং পরবর্তীকালে আরও কয়েকটি সংস্থা একই কাজ করায় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়ার পর আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি।

অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী পদ্মা সেতু নির্মাণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে এ ঋণ নেওয়া হয়। গত বছরের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের বৃহত্তম সেতু উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও সেতু বিভাগের সচিব মো. মঞ্জুর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর