শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাহাড়ে গোলাগুলিতে আটজন নিহত

♦ আরও বড় সংঘাতের আশঙ্কা ♦ গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ স্থানে গ্রামবাসী ♦ তদন্তে নেমেছে পুলিশ

বান্দরবান প্রতিনিধি

পাহাড়ে গোলাগুলিতে আটজন নিহত

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার খামতাং পাড়ার কাছাকাছি দুর্গম পাহাড়ে দুটি বিবদমান সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছেন। রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরের এ এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত সংঘর্ষ ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গতকাল দুপুরে গুলিবিদ্ধ আটজনের লাশ উদ্ধার করে।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম গোলাগুলির ঘটনা এবং আটজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খামতাং পাড়া সংলগ্ন কাটাপাহাড় এলাকায় গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে এমন খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ আটজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। কাদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। রোয়াংছড়ি থানা পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করছে। তদন্তে কারা কারা জড়িত তা বেরিয়ে আসবে।’

স্থানীয়রা জানান, নিহত আটজনই বম জাতিগোষ্ঠীভুক্ত। তারা নিহত কয়েকজনকে চিনতে পারলেও পুলিশ বলেছে, তারা এখনো নিহতদের বিস্তারিত পরিচয় জানতে পারেনি। রোয়াংছড়ি থানার ওসি আবদুল মান্নান জানান, এ বিষয়ে রোয়াংছড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয়ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ‘ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-সংস্কার)’ গ্রুপ কিংবা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-সংস্কার) গ্রুপের সঙ্গে নতুন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’-এর সামরিক সদস্যদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা ঘটে। নিহত সবাই কেএনএফের সামরিক শাখা ‘কুকিচিন ন্যাশনাল আর্মি বা কেএনএ’র সদস্য হতে পারেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেএনএফ দাবি করেছে, নিহতরা কেউ কেএনএর সদস্য নন। তাদের মধ্যে ছয়জনের বাড়ি জুরভরং পাড়ায় এবং একজনের বাড়ি পাইক্ষ্যং পাড়ায়। তারা সবাই নিরীহ গ্রামবাসী। এদিকে গোলাগুলির এ ঘটনার পর আরও বড় ধরনের কোনো হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কায় খামতাং পাড়া ও আশপাশের ১৭৫টি পরিবার রোয়াংছড়ি উপজেলা সদরের সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তাহীনতায় আতঙ্কিত আরও ৪০টি পরিবার রুমা উপজেলার বম কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে। রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোরশেদ আলম জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রিতদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্রে গোলাগুলির ঘটনায় নিহত আটজনের মধ্যে সাতজনের নাম জানা গেছে। এরা হচ্ছেন ভান দু বম, সাং খুম, সান ফির থাং বম, বয় রেম বম, জাহিম বম, লাল লিয়ান ঙাক বম, লাল ঠা জার বম। অন্য একজনের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

সর্বশেষ খবর