শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

নীতিমালা নিয়ে সাংবাদিকদের উদ্বিগ্ন না হতে বললেন সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটের সময় সংবাদ সংগ্রহের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন প্রণীত ‘সাংবাদিক নীতিমালা’ আরও পরীক্ষানিরীক্ষা করে প্রয়োজনে সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। নীতিমালা নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই’ বলেও সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেছেন তিনি। ভোটের সময় মোটরসাইকেল চলাচল এবং ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞাসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়ে নীতিমালা জারির পরদিন গতকাল এ আশ্বাস দেন সিইসি।

গতকাল নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছতা চায়, সুশৃঙ্খল, সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, সেটাই চায়। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা সব বিষয়ে একটা শৃঙ্খলাবিধানের চেষ্টা করব। অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেই বিষয়টা মাথায় রেখেই হয়তো নীতিমালাটা করেছি। তার পরও যেহেতু আপনারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কাজটা করবেন, আপনাদের মতামতগুলো নিয়ে আমরা বসে আরও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব এবং আপনাদের যথাসময়ে অবহিত করব। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের প্রায় আট মাস আগে সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে সাংবাদিকদের জন্য এ নীতিমালা প্রণয়ন করেছে ইসি।

 

ইসির নীতিমালা আজ্ঞাবহ সাংবাদিকতায় বাধ্য করার অপচেষ্টা : টিআইবি

নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীরা ‘মোটরসাইকেল’ ব্যবহার, ‘১০ মিনিটের বেশি’ ভোটকক্ষে অবস্থান ও ভোটকক্ষ থেকে কোনোভাবেই ‘সরাসরি সম্প্রচার’ করতে পারবে না বিধানাবলি সংবলিত যে নীতিমালা নির্বাচন কমিশন জারি করেছে, তা সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা পালনে প্রতিকন্ধতা সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তা ছাড়া ‘প্রিসাইডিং অফিসারকে অবহিত করে ভোট গ্রহণ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা ও ভিডিও ধারণ’ করতে পারবে এবং ‘রিটার্নিং অফিসার স্বীয় বিবেচনায় যৌক্তিকসংখ্যক সাংবাদিককে অনুমোদন ও কার্ড ইস্যু করতে পারবেন’ মর্মে যে বিধান রাখা হয়েছে, তা মূলত গণমাধ্যমকর্মীদের আজ্ঞাবহ সাংবাদিকতায় বাধ্য করার অপচেষ্টা। গতকাল বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমকে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের “চোখ ও কান” বলে অভিহিত করলেও সম্প্রতি জারিকৃত পরিপত্রের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু নিজেদের জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য করতে এ-জাতীয় “মুখরোচক” মন্তব্য করেছে এবং কার্যক্ষেত্রে সাংবাদিকদের কার্যক্রম শিকলবদ্ধ করে তুলছে।

মোটরসাইকেল স্থানীয় পর্যায়ে সংবাদকর্মীদের দায়িত্ব পালনের একটি অপরিহার্য বাহন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক কেন্দ্র আছে যেখানে গাড়ি বা অন্য কোনো যানবাহনে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তা ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে একটি গাড়ি ভাড়া করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়, এ রকম একটি পরিস্থিতিতে নির্বাচনের দিন গণমাধ্যমকর্মীদের মোটরসাইকেল ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ দুরভিসন্ধিমূলক। ১০ মিনিটের বেশি সংবাদকর্মীদের ভোটকক্ষে অবস্থান করতে না পারার যে বিধান করা হয়েছে, এর যৌক্তিকতা কী! নির্বাচন কমিশন চিহ্নিত “গোপন বুথের ডাকাতদের” রক্ষায় এই নিয়মের আমদানি কি না? তা স্পষ্ট হওয়া জরুরি।’ নীতিমালাটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।

সর্বশেষ খবর