মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

১০ মাস পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি নেতাদের সাক্ষাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ১০ মাস পর দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। শনিবার ঈদুল ফিতরের রাতে রাজধানীর গুলশানের বাসা ফিরোজায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে যান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির আট সদস্য। রাত ৮টা থেকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় তারা নেত্রীর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশলবিনিময় করেন। এ সময় কারাগারে আটক দলের নেতা-কর্মীদের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন খালেদা জিয়া। পাশাপাশি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জনগণ যেভাবে কাজ করছে, তা অব্যাহত রাখতেও বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎ শেষে ‘ফিরোজা’ ভবনের সামনে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সর্বশেষ ২০২২ সালের কোরবানির ঈদের দিন বেগম খালেদা জিয়ার দেখা পেয়েছিলেন বিএনপি নেতারা। দুদকের মামলায় দ-প্রাপ্ত বেগম খালেদা জিয়া শর্তসাপেক্ষে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন। দলের মহাসচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবার ঈদ করতে লন্ডন থেকে তাঁর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি এবং তার দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান এসেছেন। দুই নাতনি, পুত্রবূধসহ ভাই-বোনদের নিয়ে ঈদের দিন দুপুরের খাবার খান খালেদা জিয়া। সকালে তাঁর বোন সেলিনা ইসলাম ও ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারসহ স্বজনরা ফিরোজায় আসেন। পরে রাতে বিএনপির সিনিয়র নেতারা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন দেশবাসীর উদ্দেশে কী বার্তা দিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বার্তা হচ্ছে এটা যে, দেশবাসী যেন ভালো থাকে। তাদের মঙ্গলের জন্য গণতন্ত্রের জন্য তারা (বিএনপি নেতারা) যেভাবে কাজ করছেন সে কাজ যেন অব্যাহত রাখেন, সেটাই তিনি বলেছেন।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এ সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি (চেয়ারপারসন) আমাদের কুশল জানতে চেয়েছেন এবং দলের যারা কারাগারে আছেন তাদের সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাদের কষ্ট সম্পর্কে তিনি অবহিত আছেন। দেশের হাজার হাজার মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে সেগুলো সম্পর্কেও তিনি অবহিত আছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অর্থনীতির নাজুক অবস্থা এবং টানা তাপদাহের বিষয়েও তিনি অবহিত রয়েছেন বলে নেতাদের জানিয়েছেন। এ ছাড়া বৈরী আবহাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বৈশ্বিক জলবায়ুর যে পরিবর্তন হচ্ছে তা নিয়েও খালেদা জিয়া কথা বলেছেন। দীর্ঘ ১০ মাস পর দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন, কারাগারে যাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ করাটা অনেক সীমিত ছিল। তিনি বাসায় আসার পর ঈদের দিনগুলোয় আমরা তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাই। আমাদের সঙ্গে তাঁর এ সাক্ষাৎ ও আলোচনাটা ছিল অনেক দিন পর। সে জন্য আমরা সবাই কিছুটা আবেগাপ্লুত ছিলাম। আমরা আশা করি, খুব শিগগিরই তাঁর সঙ্গে আমাদের আরও ঘন ঘন সাক্ষাৎ হবে এবং সামনে তিনি বেরিয়ে আসবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি এখনো বেশ অসুস্থ, এখনো তাঁর চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা তাঁর শারীরিক অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন।

দুর্নীতির মামলায় দ-িত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় তাঁকে। এরপর থেকে গুলশানের ওই বাসায় রয়েছেন শারীরিকভাবে বিভিন্ন জটিল সমস্যায় আক্রান্ত ৭৭ বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

 

 

সর্বশেষ খবর