ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রুপির মাধ্যমে লেনদেনে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বে নতুন মাত্রা যুক্ত হতে পারে। গতকাল রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে উন্নয়ন সমন্বয় আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সংযোগ-শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে উন্নয়ন সমন্বয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আক্তার, ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির, ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভাইস প্রেসিডেন্ট শোয়েব চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী প্রমুখ।
এ ছাড়া সেমিনারে সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিসহ অন্যান্য অংশীজনেরা প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।প্রণয় ভার্মা বলেন, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বাড়াতে নতুন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও সরবরাহ চেইন খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে নতুন নতুন ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের চেষ্টাও রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দুই দেশের মধ্যে রুপির মাধ্যমে লেনদেনে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বে নতুন মাত্রা যুক্ত হতে পারে। ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীই কানেকটিভিতে জোর দিয়েছেন। রেল, সড়ক, নৌ, বিমান যোগাযোগ বাড়ালে উভয় দেশই লাভবান হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বেড়েছে। ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানির ১ বিলিয়ন ডলার থেকে প্রায় ২ বিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পাটনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা) করার জন্য কার্যক্রম চলছে বলেও জানান তিনি। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সংযোগ চালু হলে বাণিজ্য বাড়বে ৩০০ গুণ। মূল প্রবন্ধে ড. আতিউর রহমান বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বিশেষত, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রত্যাশিত মাত্রায় বৃদ্ধির জন্য স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর, কনটেইনার টার্মিনাল ইত্যাদির সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপকভিত্তিক ইতিবাচক রূপান্তর দরকার। গত বছর প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জে ভারতীয় কার্গো জাহাজ আসতে শুরু করার মতো ইতিবাচক উদ্যোগগুলো দৃশ্যমান হচ্ছে। তবে স্বীকার করতেই হবে এসব উদ্যোগের বাস্তবায়নের গতি বেশ ধীরে ছিল। তবে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীরাও এ ক্ষেত্রে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া গেলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে প্রায় ২ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য হতে পারে। ভারতের ক্ষেত্রে বাণিজ্যের পরিমাণ হতে পারে ৬ হাজার ২৪০ কোটি ডলার।