সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে এসে ‘গোপন ষড়যন্ত্র ও ধর্মীয় জিহাদ সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে গ্রেফতার বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থীসহ ৩২ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন করা হয়। একই সময় আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী মো. তৈয়বুর রহমান বাবুল বলেন, ‘আমরা আসামিদের পক্ষে আদালতে জামিনের আবেদন করি। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষও রিমান্ডের আবেদন করে। দুটি আবেদনের ওপর পুঙ্খানুপুঙ্খ দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত ৫ হাজার টাকা বন্ডে ৩২ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আদালতকে বলেছি, আসামিরা দেশের মেধাবী সন্তান। তারা টাঙ্গুয়ার হাওরে শুধু ঘুরতে এসেছিলেন। এজাহারকারী তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন তা সত্য নয়। এটি একটি সাজানো মামলা। হাওরের মতো জলমগ্ন এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির মতো কোনো উপাদান তাদের কাছে ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘আদালতের আদেশে আমরা সন্তুষ্ট। আদালতের আদেশের কপি কারাগারে পৌঁছালে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তাদের মুক্তি পাওয়ার কথা।’
তিনি বলেন, ৩৪ জন আসামির মধ্যে দুজন শিশু। একজনের বয়স ১৫ ও অন্যজনের ১৭ বছর। আইন মোতাবেক এই দুজনের জামিন শুনানি শিশু আদালতে হবে। গ্রেফতার শিক্ষার্থী সাকিব শাহরিয়ারের বাবা জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আদালত শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে যে রায় দিয়েছেন তাতে আমরা আনন্দিত। আমরা খুশি হয়েছি। আমাদের সন্তানেরা নিরেট একটি পিকনিক করতে টাঙ্গুয়ার হাওরে এসেছিল। কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম করতে আসেনি। আমরা আশা করব এই মামলাটি খারিজ করে দিয়ে তাদের দুশ্চিন্তামুক্ত করা হবে।’ উল্লেখ্য, রবিবার দিনভর টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘোরাঘুরির পর ট্যাকেরঘাট নীলাদ্রী লেকে যাওয়ার পথে বুয়েটের ২৪ জন শিক্ষার্থীসহ ৩৪ জনকে আটক করে পুলিশ। সোমবার তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে। পরে বিকালে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে বুয়েটের শিক্ষার্থী ২৪ জন, বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী সাতজন, এসএসসি পরীক্ষার্থী দুজন এবং একজন গৃহপরিচারক রয়েছেন। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, গ্রেফতার ব্যক্তিরা ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।