রাজধানীতে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রদল নেতা আমির হোসেন এবং তার সহযোগী সাকিব ও মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গতকাল ভোরে ঢাকা ও গাজীপুরে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
সিটিটিসি বলছে, আমির হোসেন সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। গ্রেফতারের সময় আমির ও সাকিবের কাছ থেকে দুই বোতল পেট্রল ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। বিএনপি নেতাদের নির্দেশে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি সমন্বয় করে আসছিলেন আমির। বাসে আগুন দেওয়ার জন্য কর্মীদের টাকাও দেওয়া হয়। প্রতিটি বাসে আগুন দেওয়ার জন্য মিজানের বিকাশে ৩ হাজার টাকা করে পাঠান আমির। পরে দ্বিতীয় দফা অবরোধে বাসে আগুন দেওয়ার জন্য ডাবল বোনাসও ঘোষণা করেন তিনি।
গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতার অংশ হিসেবে ১ নভেম্বর সকালে মুগদা বিশ্বরোডের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় মিডলাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর পালানোর সময় জনগণের সহযোগিতায় পুলিশ আল আমিন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় বাসের মালিক মুহাম্মদ দুলাল হোসেন মুগদা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। ঘটনার পরপরই সিটিটিসির ইন্টেলিজেন্স টিম ঘটনায় জড়িত ও আর্থিক সহায়তাকারীদের গ্রেফতারে কাজ শুরু করে। আল আমিন স্থানীয় বিএনপির ঊর্ধ্বতন নেতাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় তাদের দলীয় নেতা মিজানসহ অন্যদের নিয়ে যাত্রীবেশে টিটিপাড়া থেকে বাসে ওঠেন এবং ঘটনাস্থলে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেন।সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মিজানকে অবরোধের প্রথম দিন আমির হোসেন ফোনে বাসে আগুন দেওয়ার নির্দেশ দেন। মিজান আগুন দিতে পারলে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তাকে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া দেন আমির।
সিটিটিসি-প্রধান জানান, গোপন সূত্রে জানা যায় আমির গতকাল সকালেও দয়াগঞ্জে বাসে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। এজন্য তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কিছু করার আগেই যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। পুলিশি তৎপরতায় ওই এলাকায় কিছু করতে না পারায় আমির তার এক নেতার সঙ্গে আগুন দেওয়াসংক্রান্ত পরামর্শ করেন এবং অন্য সহযোগী সাকিবকে নিয়ে আরামবাগ পাম্প থেকে পেট্রোল নিয়ে কেরানীগঞ্জের দিকে রওনা হন। সিটিটিসির দল তাকে অনুসরণ করে বাবুবাজার সেতুর ওপর থেকে তাদের গ্রেফতার করে। তবে মুগদা থানা এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার পরপরই আমির মিজানের বিকাশ নম্বরে ৩ হাজার টাকা পাঠান। আমিরের বিরুদ্ধে শাহবাগ ও কোতোয়ালি থানায় আরও দুটি মামলা আছে।