শনিবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

দৃশ্যমানের নির্দেশ স্বচ্ছ ভোট

ইসির সঙ্গে সারা দেশের ডিসি-এসপিদের বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক

দৃশ্যমানের নির্দেশ স্বচ্ছ ভোট

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে পুরো দেশ মাতোয়ারা হয়ে আছে। পক্ষে বিপক্ষে প্রতিদিন বক্তব্য হচ্ছে। একটা ডাইমেনশনও পেয়ে গেছে। সংসদ নির্বাচনের সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন সিইসি। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন  তিনি। সিইসি জানান, ভোট পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন দেশও আসছে। পুরো জাতি তাকিয়ে আছে। আমাদের মেসেজটা হচ্ছে নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল করতে হবে। সুশৃঙ্খলা আমি করাতে পারব না আপনাদের করাতে হবে।

ইসির মূল চাওয়ার কথা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের স্বাধীনতা যেন ব্যাহত না হয়। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন। ভিতরে যদি সিল মারা হতে থাকে, কেউ না কেউ হয়তো তুলে (ছবি-ভিডিও) ফেলবে। সেটা যখন প্রচারিত হবে, তখন আমাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়তে পারে। কেন এটা হলো? আমাদের ব্যর্থতা অথবা অদক্ষতার বিষয়টি আসতে পারে। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের একটা কাজ হচ্ছে নির্বাচন প্রক্রিয়াটাকে যতদূর সম্ভব দৃশ্যমান করে তোলা, স্বচ্ছতা সৃষ্টি করা। স্বচ্ছতা সৃষ্টি করলে সম্ভাব্য অপপ্রচার ঢাকা পড়ে যাবে। স্বচ্ছতা মানে সত্যের স্বচ্ছতা, মিথ্যের স্বচ্ছতা। যদি অনাচার হয় তুলে ধরতে হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত দ্বিতীয় দফা প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী ছিল গতকাল। আজও প্রশিক্ষণ চলবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান এবং ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন ইটিআই মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘আপনারা এমনভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, যাতে নির্বাচন সত্যিকার অর্থে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়। এ চেষ্টা কীভাবে করবেন, সেটা জানি না। কারণ, ওই জ্ঞান আমার নেই, আপনাদের আছে। আমাদের বার্তা হচ্ছে, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ আর সুশৃঙ্খল করবেন। বৃহস্পতিবার মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে বলেছি। উনিও চেয়েছেন, নির্বাচন যেন সুশৃঙ্খল হয়। সুশৃঙ্খল আমি করাতে পারব না, আপনাদেরই করাতে হবে।’ ‘নির্বাচনের গুরুত্ব অনুধাবন করবেন প্রথমে দায়িত্ববোধ দিয়ে, ক্ষমতা বা শক্তি দিয়ে নয়’ এ মন্তব্য করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি ক্ষমতা প্রয়োগের প্রয়োজন হয়, তখন ক্ষমতা বা শক্তি দেখাবেন। গণতন্ত্রকে আক্ষরিক ও চেতনাগত অর্থে যদি বাস্তবায়ন করতে না পারি, তাহলে জাতির সামনে আমাদের জন্য এটা ব্যর্থতার নজির হয়ে থাকবে।’ তিনি জানান, ভোটের মূল কাজটা ডিসি ও পুলিশ সুপার বের করতে হবে। সমন্বয় করে নির্বাচনটা তুলে আনতে হবে। জেলা প্রশাসকের রিটার্নিং কর্মকর্তা হলে তিনি ভোটকেন্দ্রের ভিতরে যেতে পারবেন অন্যরা ভিতরে পরিবেশ ঠিক রয়েছে কিনা পর্যবেক্ষণ করবেন। ভোট কর্মকর্তাদের নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনটা যেন সুন্দর হয়, আমরা প্রশংসিত যেন হই, জনগণ, ভোটার, প্রার্থীদের আস্থা যেন অর্জন করতে পারি। সেই ব্যবস্থা আশা করি আপনারা করবেন। অতীত থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে আমরা ভবিষ্যতে সুন্দর, অবাধ, সুষ্ঠু, উৎসবমুখর এমন একটা নির্বাচন উপহার দেব যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচন কখনো আমাদের (ইসির) একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। এটা সমন্বয়মূলক কাজ। আপনাদের কাজটা থাকবে নিরপেক্ষ। যখন আমরা নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলি তখনই প্রশ্নের জন্ম হয়। জনগণ প্রার্থী সবার মধ্যে একটা ক্ষোভ হয়। এই ক্ষোভের যেন সৃষ্টি না হয়। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, আপনারা জানেন কীভাবে নির্বাচন করতে হয়। আমরাও জানি কীভাবে নির্বাচন করাতে হয়। এর মধ্যে যদি পার্থক্য বা গ্যাপ থাকে সেই বিষয়ে আলোচনা হবে। 

নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, নির্বাচন একবারেই কাছে। আগামী এক সপ্তাহে হয়তো তফসিল হয়ে যাবে। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ভোটাররা যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন এবং যাকে খুশি তাকে দিতে পারেন। সেই আয়োজনে আপনারা সম্পৃক্ত হবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর