প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ বদলে যাওয়ার বাংলাদেশ। আগামী দিনগুলোয় তরুণরাই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করাই সরকারের লক্ষ্য। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন্নাহার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান প্রমুখ বক্তৃতা করেন। হাজারীবাগ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান মালিহা, দিনাজপুরের আমেনা-বাকি রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আতিফা রহমান, খুলনার সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল কলেজের পিনাকমুগ্ধ দাস, ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৪’-এর পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী যথাক্রমে জেরিন তাসনীম রাইসা এবং ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলারস অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’-এর পক্ষে আল ফয়সাল বিন কাসেম কানন অনুষ্ঠানে নিজ নিজ অনুভূতি ব্যক্ত করেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯-এর পর থেকে ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ৫৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি আমলে সাক্ষরতার হার ছিল ৪৫ ভাগ। আমরা সেটি ৭৬ দশমিক ৮ ভাগে উন্নীত করেছি। সরকারপ্রধান বলেন, বিনামূল্যে বই বিতরণের বিষয়টি অনেকে অসম্ভব মনে করলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তা করে দিয়েছে। ২০১০ সাল থেকে আমরা বিনামূল্যে বই বিতরণ করছি। এখন পর্যন্ত ৪৬৪ কোটির বেশি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কেউ সমালোচনা করলেই সেটার জন্য ভীত হয়ে যেতে হবে আমি এটা বিশ্বাস করি না। আত্মমর্যাদাবোধ ও আত্মবিশ্বাস মানুষকে শক্তি দেয়। শিক্ষার্থীদের বলব, এটাই সব সময় চিন্তা করতে হবে। কে কী বলল তার জন্য চোখের পানি ফেলে মুখ লুকাতে হবে তা না, নিজের বিশ্বাস থেকে শিখতে হবে। তাহলে এ দেশকে তোমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। তিনি বলেন, লাখো শহীদের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীনতা ব্যর্থ করার জন্য অনেক চক্রান্ত হয়েছে। সব অতিক্রম করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আরও এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। কিছু লোক থাকে তাদের সব সময় কোনো কিছু ভালো লাগে না। আর ভালো হতেও দিতে চায় না। তাদের পাত্তা না দিলেও চলবে। তি?নি বলেন, আমরা আমাদের দেশকে নিয়ে এগিয়ে যাব। এ আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমাদের চলতে হবে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, এখন আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হবে। বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তিজ্ঞান ছাড়া কোনো দেশ বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না উল্লেখ ক?রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-পরবর্তী যারা ক্ষমতায় ছিল তারা গবেষণায় কোনো বরাদ্দ দেয়নি। গবেষণায় আমাদের কোনো বরাদ্দ ছিল না। আমাদের প্রথম বাজেট অল্প ছিল। সেখান থেকেও গবেষণার জন্য টাকা দিয়ে দিই। পরে যখন বাজেট দিই তখন ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দিয়েছিলাম। সেটা ছিল কম্পিউটার শিক্ষা এবং গবেষণায়। আমাদের শুধু একটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। আমি আরও কয়েকটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিই। সেই সঙ্গে ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, নভোথিয়েটার প্রতিষ্ঠা, সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট, বায়ু টেকনোলজি ইনস্টিটিউট-এসব আওয়ামী লীগ সরকার আমলে শুরু করেছিলাম। শেখ হাসিনা ব?লেন, আমরা সমস্ত টেলিফোন সিস্টেম ডিজিটালাইজড্ করি। কম্পিউটার শিক্ষার জন্য সুযোগ সৃষ্টি করেইদই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা হয় দু-তিনটা কম্পিউটার দিয়ে। ছেলেমেয়েরা যাতে শিক্ষা নিতে পারে তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। তা ছাড়া আইন পাস করে ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণকাজ শুরু করি। তিনি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে, দেশের-বিদেশের কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে বহুমুখী শিক্ষার ও উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করে দিচ্ছি। কারিগরি শিক্ষা আমাদের কম ছিল সেটা আমরা বাড়িয়েছি। আমাদের সরকারি সামাজিক খাতগুলোর শিক্ষাকে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই। বাজেটে শিক্ষা খাতেই সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। নতুন কারিকুলাম নিয়ে অনেকের সমালোচনা প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, জানি, একটা পরিবর্তন এলে অনেকেই নানা ধরনের কথা বলেন। আমরা পরচর্চা করতে খুব পছন্দ করি। পরচর্চা ছাড়া তো আসরই জমে না। শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বলছে এটা লিখল, ওটা লিখল। আমি বলেছি ‘এটা লিখল-ওটা লিখল শুনবা না তো’। নিজের মনে আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। নিজের ওপর বিশ্বাস থাকতে হবে। দায়িত্ব যখন নেবে দেশের জন্য কোনটা ভালো সেটা নিজের চিন্তা থেকে আসতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি উদ্ধৃতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সেবা করা, জনগণের পাশে দাঁড়ানো, জনগণের জন্য কল্যাণ করা এটাই হবে মানুষের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। খালি আমি নিজে শিক্ষিত হব, নিজে অর্থ কামাই করব, নিজেই ভালো থাকব, আমি দেশকে কিছু দেব না, আশপাশের মানুষ দরিদ্র থাকবে এটা হয় না। তিনি বলেন, সকলে মিলেই আমাদের চলতে হবে, সকলে মিলে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেই নির্দেশনাটা জাতির পিতা দিয়ে গেছেন, আমরা সেটাই অনুসরণ করি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব বাধা অতিক্রম করে বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা আমাদের তরুণ সমাজই এগিয়ে নিয়ে যাবে।
শিরোনাম
- সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে খালেদা জিয়া
- সাদিয়া আয়মানের অভিনয়ে মুগ্ধ অনিরুদ্ধ রায়
- গাইবান্ধা কারাগারে অসুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
- আদাবরের শীর্ষ ছিনতাইকারী ‘চোরা রুবেল’ গ্রেপ্তার
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
- শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বিভাগীয় শহরে বাস দিল জবি
- ভূমিকম্প অনিশ্চিত তাই বিদ্যালয় বন্ধের সুযোগ নেই: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
- ঢাকা মেডিকেলে একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ
- বাগেরহাটে ৩ বান্ধবীকে শ্লীলতাহানি ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
- হাসিনা-কামালকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ কার্নিভাল-৩ অনুষ্ঠিত
- নভেম্বরের ২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১৩ কোটি ডলার
- ফ্যাসিজম সহ্য করা হবে না, নিজেরাও ফ্যাসিষ্ট হবো না: তানিয়া রব
- বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
- ৮১ দেশি পর্যবেক্ষকের সঙ্গে ইসির সংলাপ ২৫ নভেম্বর
- ‘ফ্যামিলি ম্যান থ্রি’: মনোজ নয়, জয়দীপের সিজন?
- টিকটক ইউজারদের জন্য চালু হলো টাইম অ্যান্ড ওয়েল-বিয়িং ফিচার
- পটুয়াখালীতে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন
- বাংলাদেশের কাল ব্রুনাই চ্যালেঞ্জ