বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও তার প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসকে স্বাগত জানিয়েছে চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ভারত, তুরস্ক ও পাকিস্তান। গত বৃহস্পতিবার ড. ইউনূস ও অন্য উপদেষ্টারা শপথ গ্রহণ করেন। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন বার্তা এবং সংবাদমাধ্যমে এ দেশগুলো বাংলাদেশের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে। বাংলাদেশে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনকে স্বাগত জানিয়েছে চীন। গতকাল চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তাদের মুখপাত্র এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়টি চীন অবহিত এবং তারা এ সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে। চীন অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে বিশ্বাসী। আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখন্ডতা এবং দেশটির জনগণ, তাদের মঙ্গলের জন্য যে পথ বেছে নিয়েছে তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা ভালো প্রতিবেশী ও বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকতে চাই। চীন-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব দীর্ঘস্থায়ী ও গভীর। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে চীন অনেক মূল্যবান মনে করে। বিভিন্ন খাতে চীন ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও সামগ্রিকভাবে দুই দেশকে কৌশলগত, সহযোগিতামূলক ও পূর্ণাঙ্গ অংশীদারিকে আরও সামনে এগিয়ে নিতে বেইজিং প্রস্তুত।
গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪৮ মিনিটে করা পোস্টে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে নতুন দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আমার শুভেচ্ছা। আমরা আশা করি হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। তিনি আরও বলেন, শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য আমাদের উভয় দেশের জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল জানিয়েছেন, বাংলাদেশের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের যে কাজ করবেন, তাতে ইইউ সহায়তা করবে। এ প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে।
গতকাল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানান। তিনি দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীরে নেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এ বার্তা জানান। এতে তিনি বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রাণঢালা অভিনন্দন। তিনি বাংলাদেশকে সাফল্যের সঙ্গে একটি সুষ্ঠু ও মঙ্গলময় ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবেন, এ আশাবাদ প্রকাশ করছি। আমি তার সঙ্গে কাজ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি এবং আশা করব আগামী দিনগুলোতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অংশীদারি আরও গভীরে পৌঁছাবে।
এ ছাড়া ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি অ্যামিন এরদোগান। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করার পর ড. ইউনূসকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অভিনন্দন বার্তা পোস্ট করেন এরদোগানের স্ত্রী অ্যামিন। এতে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসের নতুন পদে সাফল্য কামনা করছি। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশে ড. ইউনূসের মূল্যবান সেবা সমাজের সব অংশকে আশা ও শান্তি দেবে।’