সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি আবদুল মতিন বলেছেন, আদালতের রায়ের তোয়াক্কা না করে একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমে নিজ সিদ্ধান্তে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে বাতিল করে দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ফলে নির্বাচন ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল দরকার। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘গণতান্ত্রিক শাসনে উত্তরণের জন্য সাংবিধানিক সংস্কার’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্টাডিজ (বিআইপিএস)। এতে সভাপতিত্ব করেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ মো. দস্তগীর হোসাইন। বক্তব্য রাখেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন, বিআইপিএসের সভাপতি সি এ এফ দৌলা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উত্তম কুমার দাস, গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
বিচারপতি আবদুল মতিন বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করেনি, ক্ষমতাসীনদের আজ্ঞাবহ ছিল। বিচার বিভাগে স্বাধীনতা নিশ্চিতে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা প্রয়োজন। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ হয় রাখতে হবে, না হয় সংশোধন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিগত পার্লামেন্টে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। শুধু তোষামোদি হয়েছে। বিচার বিভাগ ও সংসদ (নিজেদের) ভূমিকা হারিয়েছিল। এ সময় বিচার বিভাগকে স্বাধীন করা অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীন বিচার বিভাগ, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ও স্বাধীন মিডিয়া দরকার। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে মিডিয়াকে কুক্ষিগত করা হয়েছিল। মিডিয়াকে হত্যা করতে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট করা হয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলোয় গণতান্ত্রিক চর্চা ছিল না। রাজনৈতিক দলগুলোতেও সংস্কার দরকার।
আবদুল মতিন আরও বলেন, ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনকে যে নামেই ডাকেন, এটি একটি সফল আন্দোলন। যে কারণে মানুষের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা স্বৈরশাসককে দেশ থেকে পালাতে হলো। এই যে সরানো হলো, এটি হলো সাংবিধানিক অধিকার। সব অধিকার লেখা থাকে না। এ বিষয়ে তিনি বিভিন্ন ব্যাখ্যা ও উদাহরণ তুলে ধরেন।