ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন না এলে দুর্নীতি বন্ধ হবে না। দুদক বা অন্য দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমও কোনো কাজে আসবে না। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস-২০২৪ উপলক্ষে টিআইবি আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। মানববন্ধনে সংস্থাটির পক্ষ থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধে ১৪ দফা দাবি উত্থাপন করেন টিআইবির উপ-সমন্বয়ক জাফর সাদিক।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দলীয়করণ, আমলাতন্ত্র, অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি, অনিয়ম, অনাচারের কারণে দুদক একটি দুর্বল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সাঁড়াশি বা শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দুদককে ঢেলে সাজাতে হবে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৪ সালে জন্মলগ্ন থেকে দলীয় রাজনীতি ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাবে প্রভাবিত। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি, অনিয়মের কারণে দুদক নখদর্পহীন হয়েছিল। কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে এটিকে অকার্যকর করে মৃতপ্রায় বানিয়েছিল।
মূল প্রবন্ধে টিআইবির উপ-সমন্বয়ক জাফর সাদিক বলেন, বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ১০-১২ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়। বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রকল্পে লুটপাটের জন্য প্রকল্প পাসের আগে খরচ বৃদ্ধি, বাড়তি অর্থ সরিয়ে নেওয়া, কেনাকাটার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাহীন দরপত্র ও পছন্দের লোককে কাজ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিনি দুর্নীতি প্রতিরোধে টিআইবির পক্ষ থেকে ১৪ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বিচার বিভাগের নিয়োগ, পদায়ন, বদলিসহ বিচারিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে অবিলম্বে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠন; দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি একটি জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী তৈরিতে এর ব্যবস্থাপনা কর্মকাঠামো পুরোপুরি ঢেলে সাজানো; দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ফাঁকা বুলির সংস্কৃতি পরিহার করে সব ধরনের- বিশেষ করে উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতির বিচারহীনতা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি।