জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী আমাদের গর্বের বিষয়। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে তাদের মর্যাদাপূর্ণ অবদান রয়েছে। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা উচিত নয়। জাতির প্রত্যাশা সেনাবাহিনী স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার মাধ্যমে দেশ ও জাতির সেবা করবে এবং দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ও সেনাবাহিনী যার যার অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের দিকে নজর দেবে।’
গতকাল মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুমের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরসহ নায়েবে আমির, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং মজলিসে শুরার (পুরুষ ও মহিলা) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অর্থবহ আলোচনা (ডায়ালগ) দরকার। এ ডায়ালগ আয়োজন করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে। যত বড় সমস্যাই হোক, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে জামায়াত চুপ থাকতে পারে না। ইতোমধ্যে আমরা দলীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় বসেছি। দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বৈঠক শেষে আমরা বলেছি সংঘাত এবং কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্য দিয়ে জাতিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া কোনো অবস্থাতেই সমীচীন হবে না। এ সংস্কৃতির অবসান হওয়া উচিত। এজন্য প্রয়োজন অর্থবহ ডায়ালগ। এ দায়িত্বটা মূলত বর্তমান সরকারকেই নিতে হবে।’ জামায়াত আমির বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বলেছেন জাতীয় নির্বাচন তিনি এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন করতে চান। এতে আমাদের আস্থা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, ২০১৮ সালে নিশিরাতে ভোট এবং ২০২৪ সালে ডামি আর আমির প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির সঙ্গে চরম তামাশা করা হয়েছে। এ অবস্থায় জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে হবে, যার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এর জন্য দরকার সংস্কার। আমরা এ মাসের মধ্যে সংস্কার শেষ করার আশা করেছিলাম। কিন্তু হয়নি। এখন সংস্কার এবং নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ প্রয়োজন। এ দুটি ঘোষণা হয়ে গেলেই মানুষের মধ্যে সংশয় দূর হবে।’ তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছর অনেক মানুষ গুম-খুনের শিকার হয়েছে। এসবের বিচার হতে হবে। বিচার বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হলেও দৃশ্যমান কিছু আমরা দেখতে চাই। যদি দৃশ্যমান না হয় তাহলে অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। যেনতেন বিচার চাচ্ছি না, ন্যায়বিচার আশা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি দুটি স্পর্শকাতর বিষয় জাতির সামনে এসেছে। মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনা। এ ব্যাপারে সিকিউরিটি এক্সপার্ট এবং দেশের সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অথবা নির্বাচিত পার্লামেন্টের জন্য রেখে দেওয়া যেতে পারে।’