কলম্বো টেস্ট শুরুর আগে থেকে গুঞ্জনটি ভেসে বেড়াচ্ছিল। অভিমানে টেস্ট নেতৃত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। টেস্ট শুরুর আগে নেতৃত্ব ছাড়ার প্রসঙ্গে নাজমুল জানিয়েছিলেন, এখনই এসব বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় নয়। গতকাল এক দিন আগে ইনিংস ও ৭৮ রানের হারের পর মিডিয়ার মুখোমুখিতে নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন। মিডিয়ার মুখোমুখিতে নাজমুল বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। আমি টেস্ট সংস্করণে আর এই দায়িত্ব পালন করতে চাই না। আমি সবাইকে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এটা ব্যক্তিগত কোনো কিছু নয়। পুরোপুরি দলের ভালোর জন্য আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি, এটাতে দলের ভালো কিছুই হবে। এই ড্রেসিংরুমে কয়েক বছর ধরে, লম্বা সময় ধরে আমার থাকার সুযোগ হয়েছে। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত যে, তিনজন অধিনায়ক দলের জন্য সমস্যা হতে পারে। দলের ভালোর জন্য এখান থেকে সরে আসছি। যদি ক্রিকেট বোর্ড মনে করে, তিনটা অধিনায়কই রাখবে, এটা তাদের সিদ্ধান্ত।’ নাজমুল হোসেন নিজ থেকে টি-২০ নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন। তার জায়গায় নতুন টি-২০ অধিনায়ক লিটন দাস। তার কাছ থেকে হঠাৎ ওয়ানডে নেতৃত্ব কেড়ে নেয় বিসিবি। এরপর টেস্ট নেতৃত্ব ছাড়তে মানসিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় মেহেদি হাসান মিরাজের হাতে। গতকাল তার টেস্ট নেতৃত্ব ছাড়ার বিষয়টি জানতো না বিসিবি। এ প্রসঙ্গে বিসিবির কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশের পক্ষে নাজমুল টেস্ট খেলছেন আট বছর। খেলেছেন ৩৭ টেস্ট। ৭০ ইনিংসে ৩২.১৯ গড়ে ৭ সেঞ্চুরিতে ২১৮৯ রান করেন। ক্যারিয়ারে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১৪ টেস্টে। সবচেয়ে বেশি ৩৪ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। দুইয়ে ১৯ টেস্ট পরিচালনা করে সাকিব আল হাসান, তিনে হাবিবুল বাশার ১৮ টেস্ট এবং ১৭ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে চারে মুমিনুল হক। অধিনায়ক মুশফিকের জয় ৭, সাকিবের ৪, বাশারের ১ এবং মুমিনুলের ৩টি। নাজমুলের ১৪ টেস্টে জয় ৪টি। সাফল্যের বিচারে তার অবস্থান দুইয়ে। অধিনায়ক নাজমুল ১৪ টেস্টের ২৬ ইনিংসে রান করেছেন ৯০৬। সেঞ্চুরি ৩টি। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে নাজমুলের অভিষেক ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটে। অধিনায়কত্বের অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি করেন ১০৫ রানের ইনিংস খেলে। সফরে তার নেতৃত্বে গল টেস্ট ড্র করেছিল বাংলাদেশ। ড্র টেস্টে উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন নাজমুল।