১৮ মে, ২০২২ ১৮:১৪
মতবিনিময় সভায় বক্তারা

দেশে প্রতি পাঁচজনে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে প্রতি পাঁচজনে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন

মতবিনিময় সভা।

দেশে প্রতি পাঁচজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। উচ্চ রক্তচাপের কারণে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি। উপসর্গ না থাকায় আগে থেকে শনাক্ত হচ্ছে না রোগী, বাড়ছে মৃত্যু। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত দেশের তিন দশমিক দুই কোটি মানুষকে সেবা দিতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে একসাথে কাজের পরামর্শ দিয়েছেন বক্তারা।

উচ্চ রক্তচাপ দিবস উপলক্ষে বুধবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) প্রোগ্রামের কর্মকর্তারা। রাজধানীর একটি হোটেলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে এই ‘মিট দ্য প্রেস’ আয়োজন করে। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন’।

অনুষ্ঠানে জানানো হয় উচ্চরক্তচাপ বিষয়ে গণসচেতনতা তৈরি, ওষুধ এবং চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) প্রোগ্রাম। এ রোগে আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০১৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এনসিডি কর্নার করে সেবা দিচ্ছে। সারাদেশে এই এনসিডি কর্নার ২০০-তে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ‘উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ বাড়ছে। এই সংকট মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যম সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক বলেন, ‘আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর জোর দিতে হবে। শুধু হাসপাতাল বানিয়ে উচ্চ রক্তচাপের মত অসংক্রামক রোগের প্রকোপ থেকে জাতিকে রক্ষা করা যাবে না।’

উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগ ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন যেমন: অতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিহার করা, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা, তামাক ও মদ্যপান পরিহার করা, অতিরিক্ত ওজন কমানো এবং নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার বিষয়ে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।

উচ্চ রক্তচাপকে বলা হয় নীরব ঘাতক। অধিকাংশ সময় এই রোগের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ এবং উপসর্গ থাকে না। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা করা না হলে বুকে ব্যথা বা অ্যানজাইনা, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইল এবং হার্ট বিট অনিয়মিত হওয়ার পাশাপাশি স্ট্রোক হতে পারে। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনির ক্ষতি হয়। নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো যায়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী ও কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মীর ইশরাকুজ্জামান এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর