নবজাতকের প্রস্রাবের যে সকল সমস্যা সাধারণত হয়ে থাকে তার কিছু চিত্র আজ তুলে ধরছি। জন্মের পরপরই এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে শিশু সার্জারি বিশেষজ্ঞ দেখিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।
UTI/প্রস্রাবে ইনফেকশন :
এটা সাধারণত ছোট বাচ্চাদের ডায়াপার ব্যবহারের কারণে হয়। এছাড়া যদি প্রস্রাবের জায়গা পরিষ্কার রাখা না হয় কিংবা যদি বাচ্চা পর্যাপ্ত বুকের দুধ না পায় তাহলে প্রস্রাবে ইনফেকশন হয়। প্রস্রাবে দুর্গন্ধ, হলুদ ভাব এমনকি সাদা স্রাবের মতো ময়লা বেরিয়ে যেতে পারে। জন্মের পর পর ঘন ঘন প্রস্রাব, জ্বর, অতিরিক্ত পেট মোচড়ানো - এগুলো উপসর্গ। প্রস্রাবে ছোট বয়সে ইনফেকশন হলে অবশ্যই জন্মগত ত্রুটি মাথায় রাখতে হবে। এমন হলে অবশ্যই বুকের দুধ পর্যাপ্ত পাচ্ছে কি না বাবু,তা দেখতে হবে। এছাড়া ডায়াপারের ব্যবহার কমাতে হবে। যদি প্রস্রাবে ইনফেকশন হয়েই যায় নিকটস্থ শিশু বিশেষজ্ঞ দেখিয়ে নিতে হবে অবশ্যই। তবে মনে রাখতে হবে বারবার প্রস্রাবে ইনফেকশন অন্য কোনো জন্মগত ত্রুটির কারণে হচ্ছে, তখন শিশু সার্জন ও শিশু ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ দেখিয়ে পরামর্শ নিতে হবে।
সাদা স্রাব যাওয়া :
সাধারণত মেয়ে নবজাতকের জন্মের পরপরই প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে সাদা স্রাব যায়। এটা সাধারণত মায়ের দেহ থেকে ইসট্রোজেন হরমোনের প্রভাবে হয়ে থাকে। এই বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক। জন্মের পরপর মায়ের দেহ থেকে আসা ইসট্রোজেন নবজাতকের দেহে বেশি মাত্রায় থাকে, সেজন্য এমনটি হয়। সময়ের সাথে সাথে এটা ঠিক হয়ে যায়। এমন যদি বারবার হতে থাকে তাহলে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখিয়ে পরামর্শ নেওয়াই উত্তম সিদ্ধান্ত হবে।
প্রস্রাবের রাস্তা তৈরি না হওয়া :
এটি জন্মগত ত্রুটি। অনেক কারণে হয়, যেমন : ফাইমোসিস, প্যারাফাইমোসিস, প্রস্রাবের রাস্তায় পর্দা, কিডনিতে পানি জমা, এক্সট্রফি ব্লাডার, ক্লোয়েকাল এক্সট্রফি, প্রস্রাব ও মাসিকের রাস্তা এক হয়ে যাওয়া, প্রস্রাব ও পায়খানার রাস্তা এক বা কাছাকাছি থাকা, লেবিয়াল এডেসন বা মাসিকের রাস্তা জোড়া লাগা ইত্যাদি।
পরামর্শ :
এরকম বিষয়গুলোতে অবশ্যই একজন শিশু সার্জারির চিকিৎসক দেখিয়ে নেওয়া উচিত। কারণ, যদি উল্লিখিত জটিল সমস্যাগুলো ধরা পরে সেসকল সমস্যার সমাধান সার্জারি ছাড়া সম্ভব হয় না। সার্জারি করাতে হলে সেটা হয়ে যায় সাধারণত ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। তবে কম খরচে সরকারি হাসপাতালে শিশু সার্জরি বিভাগগুলো সুন্দর চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও সার্জারি করাতে পারবেন।
লেখক : নবজাতক, শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার লি. মিরপুর-১
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ