যশোর জেনারেল হাসপাতালে এইচআইভি আক্রান্ত এক অন্তঃসত্ত্বার সিজারিয়ান অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি একটি ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। অপারেশনের পর মা ও শিশু দৃশ্যত সুস্থ আছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক হোসাইন সাফায়েত বলেন, অনেক ধরণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও মানবিক দিক বিবেচনায় তারা ওই অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। রবিবার সকাল ১০টায় রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সাত সদস্যের একটি মেডিকেল টিম সফলতার সাথে পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন করেন বলে জানান তিনি। বলেন, দৃশ্যত মা ও শিশুকে দু’জনকেই সুস্থ দেখালেও আগামি কয়েকদিন বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। তখন বোঝা যাবে যে শিশুটিও এইচআইভি আক্রান্ত কিনা।
তত্ত্বাবধায়ক হোসাইন সাফায়েত বলেন, এই হাসপাতালে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন অন্তঃসত্ত্বা সন্তান প্রসব করেন। এছাড়া অন্যান্য আরও ১৫ থেকে ২০ জন বিভিন্ন রোগির অস্ত্রপচার করা হয়। হাসপাতালের চারটি অপারেশন থিয়েটার (ওটি) কক্ষের একটি এইচআইভি আক্রান্ত ওই অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচারের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। আগামি তিনদিন এই ওটি অব্যবহৃত থাকবে এবং বিশেষভাবে জীবানুমুক্ত করা হবে। গাইনিসহ জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য অপর তিনটি ওটিতে করা হবে।
তবে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) বজলুর রশিদ টুলু বলেন, বিশেষায়িত হাসপাতালে অস্ত্রোপচারটি করতে পারলে ভাল হতো। কিন্তু প্রসূতি আর্থিকভাবে দরিদ্র। সে কারণে মানবিক দিক বিবেচনায় যশোরেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাছাড়া বছরখানেক আগে এখানে এ ধরণের আরও একটি অস্ত্রোপচার হয়েছিল।
তত্ত্বাবধায়ক হোসাইন সাফায়েতও বলেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালে এ ধরণের অস্ত্রোপচার করতে কোন সমস্যা নেই। এখানে মূল সমস্যা জায়গা সংকট। আড়াইশ’ শয্যার হাসপাতালে পাঁচশ’র বেশি রোগী রাখতে হচ্ছে। কেবিনের সংকট আছে। মূলত কেবিন সংকটের কারণেই তার অস্ত্রোপচার বিলম্বিত হচ্ছিল। এরকম জনাকীর্ণ হাসপাতালে এইচআইভি রোগীকে রাখা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরণের ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসার জন্য খুলনা বিভাগে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল থাকা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন