দেশে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশনের হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, যা মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে কৃত্রিম উপায়ে প্রসব বেদনা শুরু করার ইনডাকশন পদ্ধতি ব্যবহার করে সিজারিয়ান হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন দেশের খ্যাতনামা স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর মিরপুরে ওজিএসবি হাসপাতালে আয়োজিত ‘নিরাপদ প্রসব ও ইনডাকশন পদ্ধতির মাধ্যমে সি-সেকশন হ্রাস’ শীর্ষক এক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি)। সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ডা. ফেরদৌসী বেগম ফ্লোরা এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মুনিরা ফেরদৌসী।
ডা. মুনিরা ফেরদৌসী বলেন, 'বাংলাদেশে এখনও প্রায় ৪৫ শতাংশ শিশুর জন্ম হয় সিজারিয়ানের মাধ্যমে। অথচ ইনডাকশন পদ্ধতি ব্যবহারে এই হার কমানো সম্ভব।' তিনি জানান, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০০ নারীর ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইনডাকশন প্রয়োগে ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে এবং প্রসবকালীন গড় সময় ৩.২ ঘণ্টা হ্রাস পেয়েছে। তেমন কোনো জটিলতাও দেখা যায়নি।
ডা. আঞ্জুমান আরা রীতা জানান, আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালে আগে যেখানে সিজারিয়ানের হার ছিল ৭৩ শতাংশ, ইনডাকশন পদ্ধতির ব্যবহার শুরু করার পর তা কমে এসেছে ৪৩ শতাংশে। আরও ভালো ফল পেতে চিকিৎসকদের সচেতনতা, প্রশিক্ষণ এবং ইনডাকশন ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ টিম গঠন জরুরি।
সভাপতি ডা. ফেরদৌসী বেগম ফ্লোরা বলেন, 'ইনডাকশন পদ্ধতি নতুন কোনো বিষয় নয়। বহু বছর ধরেই বিশ্বজুড়ে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং স্বাভাবিক প্রসবের হার বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমাদের দেশেও এটি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব।'
বিডি প্রতিদিন/মুসা