মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
প্রেসক্রিপশন

হৃৎপিন্ডের যত্ন নিয়ে কিছু কথা

ডা. আমিরউজ্জামান খান

হৃৎপিন্ডের যত্ন নিয়ে কিছু কথা

২৯ সেপ্টেম্বর ছিল বিশ্ব হার্ট দিবস। অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে এ দিনটি। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল- ‘প্রতিটি হৃদয়ের জন্য হৃদয়বান হোন’ অথবা ‘হৃদয় দিয়ে হৃদয়কে বুঝুন’। তবে শুধু একদিনের আয়োজন ও জনসচেতনতা হার্টকে সুস্থ রাখার জন্য যথেষ্ট নয়, চাই বছরের প্রতিটি দিনের জন্য অঙ্গীকার। যেন সুস্থ হৃদয় নিয়ে জীবনযাপন অব্যাহত রাখা যায়। হার্টের রক্তনালিতে ব্লক হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। অন্যতম কারণগুলো হলো- ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি অথবা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কম, পরিবারে হার্ট অ্যাটাক রোগের ইতিহাস। কারণগুলোর কোনোটি না থাকলে শুধু বয়স বৃদ্ধির (পুরুষের ক্ষেত্রে ৪৫ ও নারীদের ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে) কারণেও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। আমরা যদি হৃদরোগ নিয়ে সতর্ক হই তাহলে প্রাথমিক অবস্থা থেকেই এ রোগ আয়ত্তে আনা সম্ভব। আর ডায়াবেটিক রোগীদের আরো বেশি সতর্ক হতে হবে। ডায়াবেটিক রোগীদের অনেকের হার্ট অ্যাটাকের সময় বুকে ব্যথা নাও হতে পারে। এ রকম রোগী হঠাৎ করে ঘামতে শুরু করেন এবং রক্তচাপ কমে যায়। এ অবস্থা মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে কিনা নিরূপণ করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা সুস্থ জীবনের লক্ষ্য নিয়ে বাঁচতে হবে। হৃৎপিন্ডের একটি রোগ আছে, সেই রোগটির নাম করনারি আর্টারি ডিজিস বা ইসকেমিক হার্ট ডিজিস। কোনো কারণে যদি করনারি আর্টারির ভিতর চর্বি জমে হৃৎপিন্ডের মাংসপেশির অক্সিজেন ও নিউট্রিশন সরবরাহে ব্যাহত করে, তখন বুকে ব্যথা হতে পারে। এসব রোগীর অবশ্যই করনারি এনজিওগ্রাম করা উচিত। যদি করনারি আর্টারিতে চর্বি জমে পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়, তবে বুকে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হবে। সঙ্গে সঙ্গে বমি হতে পারে। ঘাম হতে পারে ও বুক ধড়ফড় করতে পারে। এই রোগকে তখন Acute Myocardial Infarction বলে থাকে। হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি যদি করনারি আর্টারিতে চর্বি জমার জন্য অক্সিজেন ও নিউট্রিশন না পায় তখন হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি শুকিয়ে যায় এবং হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি তখন চঁসঢ় করতে পারে না। ফলে শ্বাসকষ্ট হয়ে মৃত্যুও হতে পারে। সুতরাং Acute Myocardial Infarction হওয়ার আগে এনজিওগ্রাম করাটা বাঞ্ছনীয়। হৃদরোগ নির্ণয়ের জন্য ECG, Echo Cardiogram, ETT, 24 Hours Holter Monitor, Stress Echo-Cardiography, Thallium Scan অন্যতম। তবে অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি হলো Coronary Angiogram (CAG)  । অনেক সময় ECG, Echo-Cardiography, ETT, Stress Echo-Cardiogram করে করনারি আর্টারি ডিজিস নির্ণয় সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে করনারি এনজিওগ্রাম বা CAG করে রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, কার্ডিওলজি বিভাগ,  স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর