বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ব্যবসায়ীদের ‘গলার কাঁটা’ ওজন স্কেল

পরিবহন ব্যয় কেজি প্রতি বেড়েছে চার-পাঁচ টাকা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ব্যবসায়ীদের ‘গলার কাঁটা’ ওজন স্কেল

ব্যবসায়ীদের ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই ওজন মাপার স্কেল (এক্সেল লোড কন্ট্রোল)। মহাসড়ক রক্ষার নামে ওজন কড়াকড়ির কারণে ঢাকা-চট্টগ্রামে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা। এক্সেল লোড কন্ট্রোলকে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দাবি করে তা অপসারণের দাবি করেছেন তারা।

দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বলেন, ‘ওজন স্কেলের নামে গলার কাঁটা দেশের আর কোনো মহাসড়কে নেই। শুধুু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ ধরনের ওজন স্কেল স্থাপন করা হয়েছে। দেশের কোথাও এ ধরনের ওজন স্কেল নেই। স্কেলের কারণে পণ্য পরিবহন ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ। ঢাকার আমদানিকারক যারা চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করে তা ঢাকায় নিয়ে যান তারাও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই এক্সেল লোড কন্ট্রোল অপসারণের দাবি করছি।’

ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশে মহাসড়ক রয়েছে ৩৪টি। মহাসড়ক রক্ষার নামে ওজন স্কেল বসানো হয়েছে শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। এ স্কেলের কারণে চট্টগ্রাম হয়ে আসা পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে অনেকাংশ। অথচ দেশের মোংলা বন্দর, বেনাপোল স্থলবন্দরসহ অনেক বন্দর রয়েছে। প্রতিটি বন্দর দিয়েই পণ্য আমদানি হয়। কিন্তু ওজন স্কেলের খড়কে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী এবং চট্টগ্রামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, অতিরিক্ত ওজন নিয়ে পণ্যবাহী যান চলাচলের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে- এমন অজুহাতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সীতাকুন্ড ও দাউদকান্দি এলাকার দুই জায়গায় বসানো হয় ওজন মাপার স্কেল (এক্সেল লোড কন্ট্রোল)। ওজন স্কেল বসানোর আগে এ মহাসড়ক দিয়ে একটি গাড়িতে একবারে ১৮-৩০ টন পর্যন্ত পণ্য পরিবহন করা যেত। কিন্তু স্কেলের কারণে তা ১৩ টন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তাই একই পণ্য পরিবহনে লাগছে একাধিক গাড়ি। ফলে পরিবহন ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। একই সঙ্গে এ মহাসড়কে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে যানজট। পরিবহন ব্যয় সমন্বয় করতে গিয়ে পণ্যের দাম করতে হচ্ছে বৃদ্ধি। আর পণ্যের দাম বাড়ার কারণে বড় ক্রেতারা চট্টগ্রামবিমুখ হচ্ছেন। ফলে অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব পড়েছে ভোক্তা পর্যায়ে। দুই এক্সেল (ছয় চাকা) বিশিষ্ট মোটরযানের মাধ্যমে মাত্র ১৩ টন ওজনের পণ্য পরিবহন নির্দিষ্ট করে দেওয়ার ফলে শিল্পের কাঁচামাল, ভোগ্যপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন ব্যয় কেজিপ্রতি ৪-৬ টাকা পর্যন্ত বাড়ছে। একই কারণে পরিবহন ব্যয় ব্যয় বেড়েছে সরকারি সংস্থাগুলোর। ১৩ টনের বেশি পণ্য পরিবহন করতে না পারায় ব্যয় বেড়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরও।

সর্বশেষ খবর