বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সতর্কতার পরামর্শ বৈদেশিক ঋণে

মানিক মুনতাসির

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ। যার প্রথম কিস্তি ৩৫ মিলিয়ন আসছে ফেব্রুয়ারির মধ্যে।  পরের কিস্তি আসবে আগামী অর্থবছরের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমদিকে বলে আশা করছে সরকার। তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আসছে ২০২৩-২৪ বাজেটে বিদেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের পথে এগোচ্ছে সরকার। ২০ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আর্থিক মুদ্রা, ও মুদ্রার বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু ২০২৪ সাল থেকে বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়বে সেহেতু আগামী কয়েক বছর নতুন করে বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে অর্থ বিভাগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, আগামী বছর শেষে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। আর ২০২৪ সাল শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৩০ বিলিয়ন ডলারে। এ ছাড়া বছরের প্রায় পুরো সময় ধরে ডলারের বাজারে চরম এক অস্থিরতা বিরাজ করছে। এমনকি ডলারের দর সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে। সেই সংকট এখনো চলমান। টাকার বিপরীতে ডালারের দাম বেড়ে যাওয়ায় অতীতে নেওয়া ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। সম্প্রতি দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার নিয়ে করা এক পর্যবেক্ষণে সরকারি-বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ নিয়ে এ পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আগামী বছর শেষে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। আর ২০২৪ সাল শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৩০ বিলিয়ন ডলারে
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২১ সালে সুদসহ দেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর বাংলাদেশকে দ্বিগুণ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ২০২২ সাল শেষে বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ঠেকবে ২৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে। এরমধ্যে দেশের বেসরকারি খাতকে প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। বাকি ৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করবে সরকার।

এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে এখন সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। টাকার মূল্যমান কমানো হচ্ছে। অথচ আমরা বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবস্থাপনায় এক রকম ব্যর্থই হয়েছি।  রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের জন্য প্রয়োজনীয় নতুন বাজার ধরতে পারিনি। এটা ঠিক যে কভিড আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।  কিন্তু কভিড-পরবর্তী অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছিল সেগুলোও তো আমরা কাজে লাগাতে পারিনি।

সর্বশেষ খবর