আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন অর্থবছরের বাজেটে আমদানি পর্যায়ে বড় ধরনের কর পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর ফলে চাল, গম, পিঁয়াজ, ভোজ্যতেলসহ ১৫২টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে আগে যে শূন্য-হার কর (জিরো-রেটেড) প্রযোজ্য ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে এসব পণ্যের আমদানিকারকদের ২ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর (এআইটি) পরিশোধ করতে হবে। যদিও এই কর পরবর্তীতে করদাতার জমাকৃত রিটার্নের মাধ্যমে সমন্বয়যোগ্য, বাস্তবে এর প্রভাব সরাসরি বাজারে গিয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানায়, এই ব্যবস্থা চলতি বছরের ২ জুন প্রস্তাবিত বাজেটের অর্থ বিলের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ২৬ মে এ- সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন (এসআরও) জারি করা হয়েছিল। তবে সংশ্লিষ্ট শিল্প ও ব্যবসায়ী মহল মনে করছে, বাস্তবে এই করের বোঝা ভোক্তাদের ওপর পড়বে। কারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বেশির ভাগ ব্যবসায়ী আয়কর রিটার্ন জমা দেন না, ফলে তারা এআইটি সমন্বয়ের সুযোগ নেবেন না এবং সরাসরি এই কর খরচ পণ্যের দামে যুক্ত করবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের একজন কর্মকর্তা জানান, ‘আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে এসব ব্যবসায়ীকে করজালের আওতায় আনা। যেসব ব্যবসায়ীর করযোগ্য আয় আছে, তাদের জন্য এটি বাড়তি চাপ নয়, বরং স্বচ্ছতা আনবে।’ তিনি বলেন, চাল ও গমের আমদানিকারকরা মূলত উৎপাদক বা বড় ব্যবসায়ী, যারা রিটার্ন জমা দিয়ে থাকেন। ফলে তাদের মাধ্যমে বড় অঙ্কের রাজস্ব আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এআইটির আওতায় আসা অন্যান্য পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিমান ইঞ্জিন, ডাবল ডেকার বাস, অ্যারোপ্লেন, হেমোডায়ালাইসিস মেশিন, শিশু ইনকিউবেটর, বেবি ওয়ার্মার ও মূলধনী যন্ত্রপাতি। আগামী অর্থবছরের বাজেটে আমদানি পর্যায়ে কর কাঠামোয় যে পরিবর্তন আনা হয়েছে, তা নিত্যপণ্যের দামে প্রভাব ফেলতে পারে। সরকার যদিও রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নিয়েছে, তবে এর বাস্তব প্রভাব কেমন হয়, তা নির্ভর করবে ব্যবসায়ীরা কতটা করজালের আওতায় আসেন তার ওপর বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।