বাংলাদেশে কফি বাজারে দীর্ঘ সময় ধরেই শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে নেস্লে বাংলাদেশ পিএলসি। তাদের জনপ্রিয় সুইজারল্যান্ডের ব্র্যান্ড নেসক্যাফের অধীনে বিভিন্ন ধরনের ইনস্ট্যান্ট কফি ও কফি মিক্সবাজারজাত করা হচ্ছে, যা শহর থেকে শুরু করে মফস্বল পর্যন্ত ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন নেস্লে বাংলাদেশের সেলস ডিরেক্টর সৈয়দ ইকবাল মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ইনস্ট্যান্ট কফির বাজারে নেস্লের দখলে রয়েছে ৭০ শতাংশেরও বেশি বাজার অংশীদারি, যা একদিকে প্রতিষ্ঠানটির সফলতা এবং অন্যদিকে ভোক্তার আস্থার প্রতিফলন।
নেসক্যাফে ব্র্যান্ডের অধীনে নেস্লে বাংলাদেশ বাজারজাত করছে বিভিন্ন ধরনের কফি পণ্য, যার মধ্যে রয়েছে : সলিউবল কফি পাউডার : নেসক্যাফে ক্লাসিক, নেসক্যাফে গোল্ড। কফি মিক্স : নেসক্যাফেথ্রি-ইন-ওয়ান অরজিনাল, ক্রিমি লাটে, হ্যাজেলনাট লাটে, আইসডফ্রাপে, নেসক্যাফে আমেরিকানো ও সানরাইজ থ্রি-ইন-ওয়ান। এ পণ্যের বৈচিত্র্য নেস্লেকে দেশের কফিপ্রেমীদের মন জয় করতে সহায়তা করেছে। চা-প্রধান এই দেশে তরুণ প্রজন্ম ও শহুরে মধ্যবিত্তের মধ্যে কফির জনপ্রিয়তা বাড়ার পেছনে নেসক্যাফের অবদান উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, নেস্লে শুধু শহরেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও তাদের পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। সুসংগঠিত সরবরাহ ব্যবস্থা এবং বিস্তৃত বিতরণ নেটওয়ার্কের কারণে কফির চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। মফস্বল অঞ্চলগুলোতেও নেসক্যাফে এখন একটি পরিচিত নাম।
ইকবাল মাহমুদ হোসেন বলেন, নেস্লে বাংলাদেশ কাস্টমার সন্তুষ্টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিচের কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়ন করছে : উচ্চমানের পণ্য সরবরাহ : আন্তর্জাতিক মান ও নিরাপদ উপাদান দিয়ে কফি প্রস্তুত ও বাজারজাত। ক্রেতা সহায়তা ও প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা : হটলাইন, ওয়েবসাইটও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গ্রাহকের মতামত ও অভিযোগ গ্রহণ। নতুন ভ্যারিয়েন্ট উন্মোচন : ক্রেতার স্বাদ ও বাজেট বিবেচনায় নানা রকম কফির বিকল্প সরবরাহ। ব্র্যান্ড ক্যাম্পেইন ও সচেতনতা বৃদ্ধি : কফি নিয়ে সচেতনতা এবং নেসক্যাফের গল্প পৌঁছে দেওয়া নানা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে।
ইকবাল মাহমুদ হোসেন আরও বলেন, যদিও কফি বাজারে বেশ কয়েকটি প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ড রয়েছে, তবুও নেস্লে তাদের গুণগত মান, বিশ্বস্ততা এবং ব্র্যান্ড ইমেজ অটুট রাখতে সক্ষম হয়েছে। ভোক্তার আস্থা, বাজার বিশ্লেষণ এবং পণ্যের ধারাবাহিক উন্নয়ন তাদের সফলতার মূলে। নেস্লে মনে করে, কফি শুধুই একটি পানীয় নয় এটি একটি অভিজ্ঞতা, একটি আবেগ। প্রতিষ্ঠানটির ভাষায়, আমাদের কফিতে থাকতে হবে গুণগত মান, ভালোবাসা ও আস্থার স্বাদ। এ বিশ্বাস থেকেই প্রতি কাপ নেসক্যাফ হয়ে উঠেছে অনেকের দিনের অনুপ্রেরণা। কফির বাজারে চ্যালেঞ্জের কথা বলতে গিয়ে ইকবাল মাহমুদ জানান, সম্প্রতি চরম মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্বব্যাপী স্থবির হয়ে গেছে কফিরবাজার, ভালো মানের কফির দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। বিশ্বের কফি উৎপাদন কমে যাওয়া এবং তার সঙ্গে বাংলাদেশে কফি আমদানির ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্কহার কফির প্রসারে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জনপ্রিয় হয়ে ওঠা কফি নিয়ে তাই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এর সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী এবং ভোক্তাদের। এরই সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এবং নিম্নমান ও নকল কফির জন্য প্রতারিত হচ্ছেন বাংলাদেশের ভোক্তারা। তাই নেসক্যাফে কেনার সময় অবশ্যই নেস্লের রেজিস্টার্ড মার্ক দেখে কেনার অনুরোধ জানালেন তিনি। নেস্লে বাংলাদেশের কফি ব্যবসা শুধু বিক্রির সংখ্যাতেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি সম্পর্ক ভোক্তার সঙ্গে বিশ্বাসের সম্পর্ক। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী পণ্য ও উন্নততর গ্রাহকসেবার মাধ্যমে নেসক্যাফে ব্র্যান্ড দেশের কফি সংস্কৃতিতে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করেন সৈয়দ ইকবাল মাহমুদ হোসেন।