নিউইয়র্ক সিটিতে পুলিশের পথচারীকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তল্লাশির ঘটনা আগের একই সময়ের তুলনায় গত ৬ মাসে অনেক কমেছে। সে সংখ্যা ৭৬৩৬। নিউইয়র্ক সিভিল লিবাটিজ ইউনিয়ন জানিয়েছে এ তথ্য। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে শুরু হয়েছে এ কার্যক্রম। খুন, গুলি এবং অন্যান্য গুরুতর অপরাধের ঘটনা হ্রাস পাওয়ায় পথচারীকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনাও কমেছে।
আগের পুলিশ কমিশনার রেমন্ড কেলির আমলে অর্থাৎ ২০১১ সালের ১২ মাসে ৬ লাখেরও বেশি পথচারীকে থামিয়ে তল্লাশি অথবা জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা ঘটায় পুলিশের এ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তুমুল প্রতিবাদ উঠেছিল। সুশীল সমাজ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো দাবি জানায় এমন বিধি সংস্কারের। এ নিয়ে রাজপথে মিছিল-মিটিংও হয়। ২০১১ সালের প্রথম ৬ মাসে ৩ লাখ ২০ হাজার পথচারিকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ/তল্লাশির ঘটনা ঘটেছিল। যদিও ৯৮% পথচারীর কাছেই বেআইনি কোন অস্ত্র অথবা অপরাধে সম্পৃক্ততার কোন তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শুধুমাত্র বর্ণ এবং জাতিগত কারণে এই প্রক্রিয়ার ভিকটিমদের অন্যতম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানবাধিকার কর্মী এবং এটর্নি সম্তলী হক পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করেছিলেন। এক পর্যায়ে এটর্নি সন্তলী হকের সাথে সমঝোতায় বাধ্য হয় নিউইয়র্কের পুলিশ তথা সিটি প্রশাসন।
সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের নির্বাহী পরিচালক ডোনা লিবারম্যান বলেছেন, ‘মনে চাইলেই পথচারীকে থামিয়ে অযথা হয়রানির ঘটনা যত দ্রুত বন্ধ করা হবে, ততোই জনজীবনে স্বস্তি আসবে। নিউইয়র্ক সিটি পুুলিশের এ অভিযানের শিক্ষা নিয়ে আমেরিকার অন্য এলাকাতেও এমন কার্যক্রম স্থগিত করা হবে বলে আশা করছি।’
নিরাপত্তার নামে নিউইয়র্ক পুলিশের এ কার্যক্রমের টার্গেট হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ এবং হিসপ্যানিকরা। এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলাও হয়। সিটি প্রশাসন দেন-দরবার করে সে মামলার নিষ্পত্তি করার পরই পুলিশ সতর্কতার সাথে অব্যাহত রেখেছে ‘স্টপ অ্যান্ড ফ্রিস্ক’ নামক বহুল বিতর্কিত এই কার্যক্রম। তবে পুলিশের এ অভিযানের ওপর কঠোর নজরদারির জন্যে পৃথক একটি সংস্থা দায়িত্ব পালন করছে। এ কারণে মনে চাইলেই আর কাউকে থামিয়ে তল্লাশি অথবা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে যাদেরকে থামিয়ে তল্লাশি অথবা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তার মধ্যে মাত্র ১০ জনকে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটে। এ বছরের প্রথম ৩ মাসে সে হার বেড়ে ২০.৫% হয়েছিল। তবে অক্টোবরের ২ তারিখ পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটির অপরাধ ৩.০৬% কমেছে। অর্থাৎ গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ৭৬০৪১টি। গত বছর একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ৭৮৪৪৪টি।
বিডি-প্রতিদিন/ ১২ অক্টোবর, ২০১৬/ আফরোজ