নিষিদ্ধ জঙ্গি সংঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতে হামলার পরিকল্পনা করছে মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। হামলা হতে পারে পূর্ব ভারত দিয়ে। আইএস জঙ্গি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আটক জঙ্গি মোহম্মদ মসিউদ্দিন মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে ভারতীয় গোয়েন্দারা।
গত ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে জঙ্গি হামলার পর ৪ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান রেল স্টেশনে বিশ্বভারতী ফার্স্ট প্যাসেঞ্জার থেকে মুসাকে (২৫) আটক করে ভারতীয় গোয়েন্দারা। জেএমবি'র সহায়তায় ভারতে নাশকতা চালাতে চায় আইএস।
ইতিমধ্যেই পূর্ব সীমান্ত দিয়ে ভারতের মাটিতে আইএস জঙ্গি হামলার আশঙ্কার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে দেশটির নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি। মুসাকে জেরা করে ইতিমধ্যেই কলকাতার ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’ ও শ্রীনগরে বিদেশি নাগরিকদের ওপর ‘লোন উলফ’ হামলার পরিকল্পনা জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা। মধ্য প্রাচ্যের মতো এবার দক্ষিণ এশিয়াতেও নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে চায় আইএস।
জানা গেছে, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মূল চক্রী’র সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা ছিল এই মুসার। স্বাভাবিকভাবেই ভারতের পূর্ব প্রান্তে আইএস’এর নতুন জাল বিস্তারের বিষয়ে মুসার দাবিকে একেবারের উড়িয়ে দিতে রাজি নয় গোয়েন্দারা।
সূত্রে খবর জেএমবি’এর আরেকটি বড় পরিকল্পনা হল ভারতে আইএস’এর কর্মকাণ্ডের প্রচারণা করা এবং এই সংগঠনের জন্য নতুন সদস্য নিয়োগ করা। পাশাপাশি লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মুজাহিদিনের মতো পাক মদদপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতে বড়সড় হামলা সংগঠিত করা। জেএমবি’র আরেকটি লক্ষ্য হল বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে ‘সালাফিস্ট ইসলাম’ নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের জাল বিস্তারে সহায়তা করা।
এ বিষয়ে বেঙ্গালুরু ক্রাইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিস এন্ড হিস্ট্রি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এন. মনোহরণ জানান, ‘আইএস প্রথমে বাংলাদেশকে নিজেদের দখলে নিয়ে তাকে ইসলামি স্টেট বানাতে চায়। এরপর প্রতিবেশি রাষ্ট্রেও ইসলামি স্টেটের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে চাইছে। ঠিক যেমনটা তালেবান এবং আল কায়দা’এর মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি তাদের কর্মকাণ্ড বিস্তার করেছে, আইএসও সেরকম চিন্তাভাবনা করছে’।
জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমন নিয়ে গত বছরের শেষের দিকে গোয়ায় আলোচনা করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবং দুই দেশই সন্ত্রাস দমনে একে অপরকে সহায়তা করার ব্যাপারে সহমত পোষণ করেছে।
এ বিষয়ে বিএসএফ’এর সিনিয়র কর্মকর্তা পি.এস.আর আনজানেয়ুলু জানান, ‘দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আমরা দুই প্রধানমন্ত্রীর উদ্যেশ্যই বোঝার চেষ্টা করছি। সন্ত্রাস দমনে আমরা বাংলাদেশ সরকারের থেকেও প্রচুর সমর্থন পাচ্ছি।’
বিডি-প্রতিদিন/০৩ জানুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব