স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামে এক পর্নো অভিনেত্রীর সাথে কথিত সম্পর্ক নিয়ে কেলেঙ্কারি কোনোভাবেই যেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পিছু ছাড়ছে না।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প নিজেই স্বীকার করেছেন যে তার মুখ বন্ধ রাখতে তার আইনজীবীর দেয়া টাকা তিনি আবার শোধ করে দিয়েছেন - কিন্তু তা বৈধভাবেই দেয়া হয়েছে।
ওই অভিনেত্রী যেন ট্রাম্পের সাথে যৌন সম্পর্কের কথা গোপন রাখেন সে জন্য ২০১৬ সালে ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোয়েন ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন বলে জানুয়ারিতে একটি পত্রিকায় খবর বের হয়।
ওই উকিল সেকথা স্বীকার করলেও, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করে আসছিলেন এরকম টাকা-পয়সা দেওয়ার কথা তিনি জানেনই না।
এর আগে মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র রুডি জুলিয়ানি প্রকাশ করে দেন যে ওই অভিনেত্রীর মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্পের আইনজীবী তাকে যে টাকা দিয়েছিলেন - তা ট্রাম্প আবার তাকে শোধ করে দিয়েছেন। এরপরই ঘটনা নতুন মোড় নেয়।
কিছুদিন ধরে এ প্রশ্ন উঠছিল যে স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে আইনজীবী কোয়েনের দেয়া টাকাটা ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের তহবিল থেকে গিয়েছিল কিনা - কারণ তা হতো আমেরিকান ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন।
এ ব্যাপারে আজ ফক্স নিউজ টিভিতে প্রেসিডেন্টেরই আইনজীবী দলের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রুডি জুলিয়ানি - যিনি আবার নিউইয়র্ক শহরের সাবেক মেয়র - ব্যাখ্যা দিতে আসেন। তিনি বলেন, ওই টাকা প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রচারণা তহবিলের টাকা ছিল না, ফলে এ ক্ষেত্রে প্রচারণার তহবিল তসরুপের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
জানুয়ারি মাসে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকায় খবর বের হয়, ২০০৬ সাল পর্যন্ত ওই অভিনেত্রীর সাথে সম্পর্ক রেখেছিলেন ট্রাম্প।
তারপর ২০১৬ সালের নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর আগে তার মুখ বন্ধ করতে তার আইনজীবী মাইকেল কোয়েনের হাত দিয়ে গোপনে ওই অভিনেত্রীকে ১৩০,০০০ ডলার দিয়েছিলেন ট্রাম্প - এ খবর দেয় পত্রিকাটি।
তারপর সাংবাদিকের জেরার মুখে জুলিয়ানি বলেন, টাকাটা দিয়েছিল একটি 'ল' ফার্ম। প্রেসিডেন্ট পরে সেই পাওনা শোধ করে দেন। একেকবারে ৩৫ হাজার ডলার করে কিস্তিতে টাকা দেয়া হয়।
পর্ণ অভিনেত্রীর অভিযোগ: বিপদে পড়বেন ট্রাম্প?
রুডি জুলিয়ানি আরও বলেন, তিনি প্রেসিডেন্টের সাথে কথা বলেই এ সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় স্টর্মি ড্যানিয়েলসের আইনজীবী মাইকেল এভেনাত্তি বলেছেন, জুলিয়ানি কথা আমেরিকান জনগণকে ক্ষুব্ধ করবে।
তিনি বার্তা সংস্থা এপিকে বলেছেন, ট্রাম্প একটা গুরুতর অপরাধে অংশ নিয়েছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে এবং তার আচরণ, মিথ্যা এবং প্রতারণার গুরুতর পরিণাম হবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও এ সাক্ষাৎকার প্রচারের পরে এক টুইট বার্তায় বলেন, কোয়েন যে অর্থ পেয়েছেন তা প্রচারাভিযানের টাকা ছিল না। এবং তা দিয়ে দু'ব্যক্তির মধ্যে একটি তথ্য গোপন রাখার চুক্তি হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট টুইটে আরও লেখেন, বিখ্যাত এবং ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে এরকম ঘটনা প্রায়ই হয়ে থাকে।
তিনি টুইটে বলেন, মিজ ক্লিফোর্ড (স্টর্মি ড্যানিয়েলসের আসল নাম) যাতে মিথ্যা বলে টাকা আদায় করতে না পারেন সে জন্যই এ চুক্তি।
বিডি প্রতিদিন/০৩ মে ২০১৮/আরাফাত