পাকিস্তানে পুলিশ বলছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি শহরে নির্বাচনী প্রচারণার সময় আত্মঘাতী এক বোমা হামলায় কমপক্ষে ৮৫ জন নিহত হয়েছেন।
বালুচিস্তান প্রদেশে কোয়েটার কাছে মাসতুং শহরে চালানো এই হামলায় প্রাদেশিক নির্বাচনের একজন প্রার্থীও প্রাণ হারিয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরো বহু মানুষ।
শুক্রবার দিনের আরো আগের দিকে উত্তরাঞ্চলীয় বান্নু শহরে আরেকটি নির্বাচনী সমাবেশে বোমা হামলায় চারজন নিহত হয়।
আাগামী ২৫ জুলাই পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নির্বাচনের আগে আরো সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে।
গত মঙ্গলবার উত্তরাঞ্চলীয় পেশাওয়ার শহরে একটি নির্বাচনী সমাবেশে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২২ জন নিহত হয়। পাকিস্তানি তালেবান সবশেষ এই হামলার কৃতিত্ব দাবি করেছে।
মাসতুং-এ শুক্রবারের হামলায় যতো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, পাকিস্তানে গত এক বছরেরও বেশি সময়েও, একক কোন হামলায় এতো ব্যাপক সংখ্যক মানুষের হতাহত হওয়ার ঘটনা আর ঘটেনি।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বালুচিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনের একজন প্রার্থী সিরাজ রাইসানি। তিনি বালুচিস্তান আওয়ামী পার্টির একজন প্রার্থী ছিলেন।
ইসলামাবাদ থেকে বিবিসির সাংবাদিক এম ইলিয়াস খান বলছেন, সবশেষ এই হামলার ঘটনাটি পাকিস্তানে একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল।
তিনি বলেন, সোনাবাহিনী একদিকে যেমন দাবি করছে যে তারা জঙ্গিদের তাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনি এরকম একটি হামলার ব্যাপারে কাছ থেকে কোন হুমকিও ছিল না।
এর আগে, ২০১৩ সালের নির্বাচনের আগে জঙ্গিরা আগাম হুমকি দিয়েছিল। ফলে তখন কিছু কিছু রাজনৈতিক দল খুব কমই প্রচারণা চালিয়েছিল।
তিনি বলছেন, ওই দলগুলোই আবার আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। আর আক্রমণকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, এসব দল যাতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে না পারে।
খান বলছেন, সবশেষ এই হামলার পর নির্বাচনের আগে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে।
এসব হামলার ঘটনাই ঘটেছে দুর্নীতির দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সাজা হওয়ার পর।
শুক্রবারের সব শেষ হামলাও হয়েছে লন্ডন থেকে মি. শরীফের লাহোরে ফিরে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে।
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের দেশে ফেরা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে আরেক উত্তেজনা। তাকে স্বাগত জানাতে গিয়ে বিক্ষোভ করলে তার বহু সমর্থককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। শহরে নামার পর গ্রেফতার করা হয়েছে নওয়াজ শরীফকেও।
তার আগে আবুধাবীতে শরীফ বলেন, আগামী নির্বাচনের কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। কারণ সরকার বিরোধীদের উপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে। তার সাথে ছিলেন কন্যা মরিয়মও। তাকেও পুলিশ আটক করেছে। তিনিও কারাদণ্ডে দণ্ডিত।
আদালত যখন তাদের সাজা দেয়, তারা দুজনেই তখন লন্ডনে ছিলেন। লন্ডনে শরীফের স্ত্রীর চিকিৎসা চলছে।-বিবিসি বাংলা
বিডি প্রতিদিন/১৪ জুলাই ২০১৮/আরাফাত