ইরাকের অর্থনীতির হাল শোচনীয়। দেশের তরুণ-তরুণীদের ধারণা, যে এলিটরা প্রশাসনের নানা স্তরে বসে আছে, তাদের জন্যই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নতুন কলকারখানা তৈরি হচ্ছে না। বেকারত্ব বাড়ছে। দুর্নীতি লাগামছাড়া। তরুণ-তরুণীরা প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় সংগঠিত হওয়া শুরু করেছিল। অক্টোবরের শুরুতে ফেসবুক থেকে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়।
শুক্রবার সেই আন্দোলন উঠেছে তুঙ্গে। সাবেক একনায়ক সাদ্দাম হুসেনের পতনের পরে এত বড় বিক্ষোভ সেদেশে দেখা যায়নি। হাজারে হাজারে তরুণ-তরুণী পথে নেমেছে। তাদের বিরুদ্ধে পালটা আক্রমণ চালিয়েছে সরকারও। ইরাকের মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, শুক্রবার কাঁদানে গ্যাসে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর তাহরির স্কোয়ারে কাঁদানে গ্যাস ও রবার বুলেটে আহত হয়েছেন অন্তত ১৫৫ জন। বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছে পাঁচজন।
বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগের বয়স ২০ এর কাছাকাছি। তারা মূলত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী। তাদের সঙ্গে স্কুল কলেজের শিক্ষক ও অন্যান্য বয়স্ক মানুষও আছেন। তাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতারা দীর্ঘদিন ধরে ইরাকের তেল সম্পদ লুট করেছেন। কোনও রাজনৈতিক দল আন্দোলনের নেতৃত্বে নেই। বিক্ষোভকারীরা রাজনীতিকদের বয়কটের ডাক দিয়েছেন। গত এক মাসে নিহত হয়েছেন ২৫০ জন আন্দোলনকারী।
২০১৭ সালে ইরাক সরকার ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তখন থেকেই দেশের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। যুদ্ধের ফলে ইরাকের বিস্তীর্ণ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। লক্ষ লক্ষ ইরাকি নিজেদের বাসস্থান হারান। এরপর মাঝে মাঝে দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়। গত গ্রীষ্মে ইরাকে একদফা বিক্ষোভ হয়। গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তার বিরুদ্ধেই হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেন। সূত্র : দ্য ওয়াল।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক