২ আগস্ট, ২০২০ ১৪:৪৬

চীনে-পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানের চেয়ে কতটা এগিয়ে ভারতের রাফাল

অনলাইন ডেস্ক

চীনে-পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানের চেয়ে কতটা এগিয়ে ভারতের রাফাল

ভারতের বিমানবাহিনীতে যুক্ত হয়েছের পাঁচটি রাফাল যুদ্ধবিমান। ফ্রান্সের থেকে সব মিলিয়ে ৩৬টি রাফাল পাবে ভারত। পাকিস্তানের বিমানবাহিনী আমেরিকায় তৈরি এফ ১৬ যুদ্ধবিমান ছাড়াও চীনে তৈরি চেংগডু জেএফ ১৭ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে। অন্যদিকে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্স বা চীনের বায়ুসেনার মূল অস্ত্র চেংগডু জে ২০এস যুদ্ধবিমান। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, চীন-পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানগুলির তুলনায় ফ্রান্সে তৈরি রাফাল ঠিক কতটা এগিয়ে বা পিছিয়ে:

পাকিস্তান এবং চীন যে যুদ্ধবিমানগুলি ব্যবহার করছে, সেগুলি দিনে এবং রাতে উড়তে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই চালাতে সক্ষম। চীনের দাবি অনুযায়ী, জেএফ ১৭ ফোর্থ জেনারেশন এবং জে ২০ ফিফথ জেনারেশন এয়ারক্রাফট। অন্যদিকে রাফালকে বলা হচ্ছে ৪.৫ জেনারেশন এয়ারক্রাফট। রাফালের নির্মাণকারী সংস্থা দাসল্ট-এর দাবি, যে লক্ষ্যে কাজে লাগানো হয়, প্রয়োজনে রাফাল তার থেকেও অতিরিক্ত করার ক্ষমতা রাখে।

সূত্র অনুযায়ী, চীনের জে ২০ এর খালি অবস্থায় ওজন ১৯০০০ কেজি আর টেক অফ করার সময় সর্বোচ্চ ৩৭,০১৩ কেজি ওজন হতে পারে।  খালি অবস্থায় রাফালের ওজন ৯৯০০ থেকে ১০৬০০ কেজি। আর সর্বোচ্চ টেক অফ ওয়েট ২৪৫০০ কেজি। জেএফ ১৭ খালি অবস্থায় ৬৪১১ কেজি এবং সর্বোচ্চ টেক অফ ওয়েট ১২৪৭৪ কেজি। জে ২০ অনেক বেশি জ্বালানি এবং অস্ত্র বহনে সক্ষম। 

রাফালের নির্মাণকারী সংস্থা দাসল্টের দাবি অনুযায়ী, পাখার নকশার জন্য উঁচু কোণ থেকেও শত্রুপক্ষের উপরে তীব্র হামলা চালাতে সক্ষম রাফাল, যা আকাশে লড়াইয়ের সময় এই যুদ্ধবিমানকে প্রতিপক্ষের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রাখে।

রাফাল সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ফুট উচ্চতায় উঠতে পারে, জেএফ থান্ডার উঠতে পারে ৫৪ হাজার ফুট উচ্চতায়। কিন্তু এ দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে চীনের হাতে থাকা জে ২০এস। কারণ এই যুদ্ধবিমান প্রয়োজনে ৬৫,৬২০ ফুট উচ্চতায় উড়তে সক্ষম।

আবার অপারেশনাল রেঞ্জ-এর দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে রাফাল। অর্থাৎ নিজের ঘাঁটি থেকে ওড়ার পর রাফাল যতটা দূরত্ব অতিক্রম করতে পারবে, তা অন্য দু'টি যুদ্ধবিমানের পক্ষে সম্ভব নয়। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রাফাল যে ধরনের মিসাইল এবং অস্ত্রশস্ত্র বহনে সক্ষম, তা পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম সেরা এবং সর্বাধুনিক। রাফাল যে ধরনের METEOR এয়ার টু এয়ার লং রেঞ্জ মিসাইল ছুড়তে সক্ষম হওয়ায় রাফালের ধারেকাছে ঘেঁষার সাহস পাবে না প্রতিপক্ষ বিমান।

এর পাশাপাশি রাফাল SCALP লং রেঞ্জ এয়ার টু ল্যান্ড মিসাইল ব্যবহার করতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্র অনেকটা নীচে থাকা প্রতিপক্ষ শিবির ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও রাফালে AM39 EXOCET অ্যান্টি শিপ মিসাইলও যুক্ত করা যায়, তাছাড়া ৫০০ থেকে ২০০০ পাউন্ড পর্যন্ত ক্ষমতার লেসার গাইডেড এবং নন গাইডেড বোমাও রাফাল থেকে নিক্ষেপ করা সম্ভব।

রাফাল ইউরোপে তৈরি একমাত্র যুদ্ধবিমান যাতে ইলেক্ট্রনিক রাডার রয়েছে। মেকানিক্যাল রাডার এবং অ্যান্টেনার তুলনা ইলেক্ট্রনিক রাডার দ্রুত শত্রুপক্ষকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি একাধিক লক্ষবস্তুকেও খুঁজে বের করতে পারে৷

এখনও পর্যন্ত যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে ৩০ হাজার ঘণ্টারও বেশি সময় উড়েছে রাফাল। সেই তুলনায় জেএফ ১৭ বা জে ২০ এখনও পর্যন্ত যুদ্ধক্ষেত্র বা সেই ধরনের পরিস্থিতিতে পরীক্ষিত নয়।

রেট অফ ক্লাইম্ব বা কত দ্রুত যুদ্ধবিমান বেশি উচ্চতায় উঠতে পারে, তা আকাশে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ সেদিক দিয়েও রাফাল এই দুই প্রতিপক্ষের থেকে এগিয়ে। বিভিন্ন রিপোর্টের দাবি অনুযায়ী, প্রতি মিনিটে ৬০ হাজার ফুট উচ্চতায় উঠতে পারে রাফাল। সেখানে ৫৯,৮৪২.৫২ ফুট উঠতে পারে  চেংগডু জে ২০। আর জেএফ থান্ডারের ক্লাইম্ব রেট ৫৯০০০ ফুট প্রতি মিনিট। 

সূত্র: নিউজ এইটিন

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর