মানব পাচার একটি বৈশ্বিক সমস্যা। দালালদের বর্বর নির্যাতনে জীবনহানি সত্ত্বেও বিশ্বে মানব পাচার থামছে না। ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন পথ ব্যবহার করে লোকজন অবৈধ পথে বিদেশ পাড়ি দিয়েই চলছে। ভাগ্য বদলাতে গিয়ে দালাল নামক মানব পাচারকারীদের প্রলোভনের শিকার হচ্ছেন তারা। এবার মানব পাচারের ওপর নতুন বৈশ্বিক চলচ্চিত্র 'হোয়াট ইজ হিউম্যান ট্রাফিকিং' নির্মাণ ও প্রচারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অ্যামিরেটস এয়ারলাইন্স। প্রখ্যাত অভিনেতা লিয়াম নিসানকে সঙ্গে নিয়ে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছে ‘ ইটস এ পেনাল্টি’ । শনিবার অ্যামিরেটস এয়ারলাইন্সের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয় ৷
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বল্পদৈর্ঘ্য এই মুভিটির উদ্দেশ্য হলো মানব পাচার ও শোষণের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত ও ভুল ধারণা দূর করা।
অ্যামিরেটস তার সব ফ্লাইটের ইনফ্লাইট প্রোগ্রামে এই চলচ্চিত্রটি অক্টোবর থেকে প্রদর্শনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে । এর মাধ্যমে মানব পাচার সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও রোধে ভূমিকা রাখতে চায় এয়ারলাইন্সটি।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর একটি পরিসংখ্যান মতে ২০১৭ সালে ২ কোটি ৪৯ লাখ মানুষ বলপূর্বক, ভীতি প্রদর্শন ও প্রতারণার মাধ্যমে মানব পাচার ও শোষণের শিকার হয়েছেন, যার ৭৫ শতাংশ নারী ও শিশু ।
নিরাপত্তা বিভাগের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি এজেন্সি ও সংস্থার সঙ্গে এই সমস্যা রোধে যৌথভাবে কাজ করছে অ্যামিরেটস। যার মধ্যে রয়েছে আইএটিএ, ইউএস ওভারসিজ সিকিউরিটি অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল (ওসাক) ও ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগ অ্যান্ড ক্রাইমস (ইউএনওডিসি)।
অ্যামিরেটস তাদের বিমানবন্দর স্টাফ ও ক্রুদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, যার ফলে তারা সন্দেহজনক কিছু চিহ্নিতকরণ এবং সংশ্লিষ্ট আইন রক্ষাকারী সংস্থাকে রিপোর্ট করার ব্যাপারে পারদর্শী।
জানা যায়, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি বা ইউরোপের অন্য কোনো দেশে অভিবাসী প্রত্যাশীদের প্রথমেই নিয়ে যাওয়া হয় দুবাই, লিবিয়া কিংবা মিসরে। সেখানকার দুর্গম মরুপথ পাড়ি দিয়ে ব্রাজিল, বলিভিয়া, ইকুয়েডর, কলাম্বিয়া, পানামা হয়ে মেক্সিকো পৌঁছানোর ভয়ঙ্কর রুট আবিষ্কার করে পাচারকারীরা। এ রুটে তাদের আড়াআড়িভাবে পাড়ি দিতে হয় ভয়ঙ্কর জঙ্গল ‘ড্যারিয়েন গ্যাপ’। ছয় শতাধিক বর্গমাইলের এ দুর্গম বনপথে রয়েছে বড় বড় বিষাক্ত সাপ আর ভয়ঙ্কর সব বন্যপ্রাণী।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার