মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৯ সালে দুই ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ব্র্যান্ডন বার্নার্ড নামে একজনকে বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ইন্ডিয়ানা রাজ্যে টেরে হট শহরের কারাগারে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তার আগে শেষ মুহূর্তে করা এক প্রাণভিক্ষার আবেদন মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেয়।
ব্র্যান্ডন বার্নার্ডের দেহে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগের পর স্থানীয় সময় রাত ৯টা ২৭ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তার আগে তিন মিনিট ধরে শান্তভাবে দেয়া শেষ বার্তায় নিহতদের পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন বার্নার্ড।
"আমি দুঃখিত। আমার এখন যা অনুভব করছি, এবং সেদিন যা অনুভব করেছিলাম তা প্রকাশ করতে আমি শুধু এই ক'টি শব্দই বলতে পারি" - তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয় এসোসিয়েটেড প্রেসের খবরে।
বার্নার্ডের অপরাধ কী ছিল?
১৯৯৯ সালের জুন মাসে টড এবং স্টেসি ব্যাগলি নামে এক দম্পতিকে হত্যায় জড়িত থাকার জন্য ব্র্যান্ডন বার্নার্ডকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
টেক্সাসে একদল তরুণ ওই দু'জনের জিনিসপত্র নিয়ে নেবার পর তাদেরকে তাদেরই গাড়ির পেছনের বুটে জোর করে ঢোকায়, তাদের গুলি করে এবং গাড়িটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
ওই তরুণদের একজন ছিলেন এই বার্নার্ড। গুলি করেছিলেন তার সঙ্গী ক্রিস্টোফার ভিয়ালভা, আর গাড়িটিতে আগুন লাগান বার্নার্ড। ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য ভিয়ালভারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় গত সেপ্টেম্বর মাসে। বাকিদের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বার্নার্ডের আইনজীবীরা বিচারের সময় বলেন, টড ও স্টেসি ব্যাগলি সম্ভবত গাড়িতে আগুন লাগানোর আগেই মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারপক্ষ বলছে, গুলি করার পর টম ব্যাগলি তৎক্ষণাৎ মারা যান, কিন্তু স্টেসির শ্বাসনালীতে কালো ধোঁয়ার ঝুল পাওয়া গেছে - যার অর্থ, তিনি গুলিতে নয় বরং ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন।
বার্নাডের মৃত্যুদণ্ড রহিত করে কারাদণ্ড দেবার জন্য অনেকেই আবেদন করেছিলেন। রিয়ালিটি টিভি তারকা কিম কার্দাশিয়ান ওয়েস্টসহ অনেকেই এই দণ্ড কার্যকর না করার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন।
গত ৭০ বছরে প্রথম তরুণতম অপরাধী যার মৃত্যুদণ্ড হলো
১৯৯৯ সালে বার্নার্ড যখন দোষী সাব্যস্ত হন, তখন তার বয়স ছিল ১৮। গত প্রায় ৭০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে তার মধ্যে তিনি হচ্ছেন সবচেয়ে কমবয়স্ক অপরাধী।
সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ট্রাম্পের সময়
যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকার মেয়াদ শেষ হবার আগে আরো চারটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এগুলো সম্পন্ন হলে, গত একশ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি (মোট ১৩টি) মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রেকর্ড স্থাপিত হবে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকার মেয়াদে।
তা ছাড়া গত ১৩০ বছরের মধ্যে এক প্রেসিডেন্টের বিদায় এবং পরবর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্বগ্রহণের মধ্যবর্তী এই সময়টুকুতে কোন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি। এবার সেই নজিরও ভাঙা হচ্ছে।
আগামী ২০শে জানুয়ারি জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক