মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের এক প্রতিবেদনেই তোলপাড় এশিয়ার বড় (শীর্ষ) ধনীর খেতাব নিজের করে নেওয়া গৌতম আদানির সাম্রাজ্যে। আদানি গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা সব কোম্পানির শেয়ারে ধস নেমেছে। জনআস্থার বদলে ভারতে ক্রমাগত বাড়ছে আদানি বিদ্বেষ।
বন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শুরু করে গণমাধ্যম সব কব্জাগত করতে থাকা আদানি পড়েছেন বড় ধরনের বিপাকে। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে হিন্ডেনবার্গ। যাদের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গেল তিন বছরে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার পথে আদানি নিয়েছেন নানারকম প্রতারণার আশ্রয়। তিনি যেমন কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়েছেন, তেমন ব্যবসাকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে তুলতে কাজে লাগিয়েছেন রাজনৈতিক ক্ষমতাকেও। সাথে শুল্কমুক্তির (ট্যাক্স হ্যাভেন) সুবিধাও নিয়েছেন নানা দেশে। যে কৌশলে মোটা অঙ্কের কর ফাঁকি দিয়েছেন আদানি।
আদানির এমন কাণ্ড অর্থনীতির জগতে পরাশক্তি হতে চাওয়া ভারতকে বড় ঝাঁকিই দিয়েছে বলা যায়। ফলে বাধ্য হয়ে হিন্ডেবার্গের প্রতিবেদনের চার শতাধিক পৃষ্ঠার লম্বা জবাব দিয়েছে আদানি গ্রুপ।
তবে হিন্ডেবার্গও ছেড়ে কথা বলছে না। আদানি গ্রুপের উত্তরের প্রতিত্তুর দিতেও তারা খুব একটা সময় নেয়নি। মার্কিন এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, জাতীয়তাবাদকে ঢাল করে আসল বিষয়টিই এড়িয়ে যাবার পায়তার করছে আদানি গ্রুপ। দেশের উন্নতির প্রসঙ্গ টেনে নিজেদের বিতর্কিত শ্রীবৃদ্ধির বিষয়টি আড়াল করতে চাইছে তারা।
আদানি গ্রুপের সব যুক্তিই নাকচ করে দিয়েছে হিন্ডেনবার্গ। তারা বলেছে, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে, জালিয়াতি জালিয়াতিই। এই পন্থায় পৃথিবীর অন্যতম ধনী হলেও তা জালিয়াতিই।’
হিনডেনবার্গের দাবি, তাদের করা ৮৮ নির্দিষ্ট প্রশ্নের ৬২টিটির উত্তরই দিতে পারেনি আদানি গ্রুপ। হিন্ডেনবার্গ আরও বলেছে, ভারতের উন্নয়নের ভবিষ্যতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে আদানি গ্রুপ। তারা দেশের পতাকায় দেহ ঢেকেই দেশে লুটপাট চালাচ্ছে।
হিন্ডেবার্গের প্রতিবেদনের জবাবে ৪১৩ পৃষ্ঠার উত্তর বা প্রতিবাদলিপিতে আদানি গ্রুপ দাবি করেছিল, ভারতের আইন সম্পর্কে মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির পরিষ্কার ধারণা নেই। ভারতীয় বাজারে পুঁজি কীভাবে সংগ্রহ করা হয়, সে বিষয়েও হিন্ডেনবার্গের ধারণা কম বলে দাবি আদানি গ্রুপের। সেকারণেই হিন্ডেনবার্গ ভিত্তিহীন অভিযোগ দাঁড় করেছে।
সূত্র: হিন্ডেনবার্গ
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল