১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১২:০১

নিকারাগুয়ার কারাগার থেকে ২২২ রাজবন্দি যুক্তরাষ্ট্রে এলেন

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

নিকারাগুয়ার কারাগার থেকে ২২২ রাজবন্দি 
যুক্তরাষ্ট্রে এলেন

২২২ রাজবন্দি নিকারাগুয়ার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ফ্লাইটে উঠে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী সংলগ্ন ডুলেস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে অবতরণ করেছেন। এদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয়া হচ্ছে বলে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেদ প্রাইস জানান। বন্দিদের মধ্যে রাজনীতিক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা রয়েছেন।

উল্লেখ্য, নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ডেনিয়েল ওর্তেগো, ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজরিও মুরেলোর স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদ করায় সম্প্রতি বহু মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের অভিযোগ, ওর্তেগো ও রোজরিও ক্রমাগতভাবে রাশিয়ার অনুগত হয়ে পড়েছে। এজন্যে যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে নিকারাগুয়ায় তাদের সকল সমর্থক রাজবন্দিকে মুক্ত করে এনে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দিতে। তারই অংশ হিসেবে উপরোক্ত ২২২ জনকে আনা হলো। এরমধ্যে একজন ইউএস সিটিজেনও ছিলেন। ফ্লাইটে উঠানোর প্রাক্কালে সকলকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, নিকারাগুয়া ছাড়তে তারা সম্মত কিনা। সে সময় মাত্র দু’জন যুক্তরাষ্ট্রে আসতে অনীহা প্রকাশ করেন। তাদেরকে আনা হয়নি।

বাইডেন প্রশাসন আরো জানায়, সম্প্রতি নিকারাগুয়ায় অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ওর্তেগো তার কট্টর বিরোধী পক্ষকে প্রার্থী হতে বাধা দিয়েছেন। অপরদিকে, নিকারাগুয়ার একজন বিচারপতি এই ২২২ জনকে বিশ্বাসঘাতক এবং বিদেশীদের চর হিসেবে অভিহিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট ওর্তেগোর যুক্তি হচ্ছে, এসব বন্দি রাজপথ উত্তপ্ত করে ২০১৮ সালে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার একটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। তারা দেশটির সোস্যাল সিকিউরিটি সিস্টেমকে পরিবর্তনের কথাও বলেছিল। ঐ বিক্ষোভের সময় দেশটির পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ গ্রজণ করে। হামলায় অন্তত ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের বর্বরতায় অতীষ্ঠ হয়ে লক্ষাধিক মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে বলেও মার্কিন প্রশাসন জানায়। নিকারাগুয়ার সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার পাশাপাশি ওর্তেগো প্রশাসনকে রাশিয়ার শিবির থেকে বের করে আনতে বাইডেন প্রশাসন নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে বলা হয়েছে।

স্মরণ করা যেতে পারে, নিকারাগুয়ার প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রান্সিসকো আগুয়েরে-সাকাসাকে ২০২১ সালে ওর্তেগো প্রশাসন গ্রেফতার করেছিল। কারণ, তিনিও স্বৈরাচারি আচরণের প্রতিবাদ ও নিন্দা করেন। তার ছেলে টিভি নাট্যকার রবার্তো আগুইরে-সাকাসাকেও গ্রেফতার করা হয় এবং ছেলের মুক্তি দাবিতে তিনি গণস্বাক্ষর অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রীও উপরোক্ত ২২২ জনের মধ্যে আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেই তারা নিকারাগুয়ার রাশিয়াপন্থি ওর্তেগো সরকারকে হটানোর আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন। 

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর