উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং পৌঁছেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল।
বুধবার কোরিয়া যুদ্ধের অবসানের ৭০তম বার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই তাদের এ সফর।
একই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে একটি চীনা প্রতিনিধিদলও বুধবারই আরও পরের দিকে উত্তর কোরিয়ায় এসে পৌঁছাবে। এ বার্ষিকীর দিনটি উত্তর কোরিয়ায় বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং এ উপলক্ষে পিয়ংইয়ংএ বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ হয়ে থাকে।
কোভিড মহামারির বিস্তার ঠেকাতে ২০২০ সালে উত্তর কোরিয়া তাদের সীমান্ত ও সবরকম বৈদেশিক কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল। এর পর এই প্রথম এ ধরনের সফর হচ্ছে।
তবে এ সফরের মধ্যে দিয়ে পিয়ংইয়ংএর সীমান্ত নীতির কোন পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।
কিছু বিশ্লেষক বলছেন, দেশটির বিজয় দিবসের প্যারেডে চীনা ও রুশ দূতদের অন্তর্ভুক্ত হওয়াতে কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল করার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ আগে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় লোকজনকে মাস্ক ছাড়া হেঁটে বেড়াতে দেখা গেছে।
একই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে একটি চীনা প্রতিনিধিলও আসছে-যার নেতৃত্ব দেবেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী কমিটির লি হংঝং।
চীন ও রাশিয়া দীর্ঘকাল ধরেই উত্তর কোরিয়ার মিত্র। ১৯৫০ এর দশকে কোরিয়া যুদ্ধের সময় এ দুটি দেশই উত্তর কোরিয়াকে সমর্থন যুগিয়েছিল।
রুশ প্রতিনিধিদলটি পিয়ংইয়ং এসে পৌঁছালে তাদের উষ্ণ সংবর্ধনা জানানো হয়। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগু একটি সেনা দলের সালাম নেন। তাকে স্বাগত জানিয়ে একটি ব্যানার ঝুলতে দেখা যায়।
সংবাদদাতারা বলছেন, মস্কো যে এখন উত্তর কোরিয়াকে "কূটনৈতিক ও সামরিক মিত্র" হিসেবে গুরুত্ব দিচ্ছে তা এ সফর থেকে বোঝা যায়।
গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে আভাস মিলছে যে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়া বিপুল পরিমাণ কামানের গোলা এবং রকেট কিনেছে উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে।
ওয়াশিংটন ইতোমধ্যে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যে তারা ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে সামরিক সাহায্য দিচ্ছে। তবে পিয়ংইয়ং এবং মস্কো উভয়েই একথা অস্বীকার করেছে।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে যে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমাগত বাড়ছে-তার প্রেক্ষাপটেই শোইগুর এ সফর।
অন্যদিকে, তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কেরও এখন অবনতি হয়েছে।
সম্প্রতি ট্রাভিস কিং নামে একজন মার্কিন সৈন্য উত্তর কোরিয়ায় পালিয়ে যাবার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র পিয়ংইয়ংএর সাথে কথা বলার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
সূত্র : বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত