অবশেষে হাফসেঞ্চুরি পেয়েছেন লিটন দাস। ১৩ ম্যাচ পর হাফসেঞ্চুরির খরা কাটিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক। ক্যারিয়ারের ১২ নম্বর এবং অধিনায়ক লিটনের এটা প্রথম হাফসেঞ্চুরি। টাইগার অধিনায়ক সর্বশেষ হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন ২০২৪ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে। কিংস্টনে ৪৯ বলে ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ডিএল মেথডের ম্যাচটি হেরে টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল টাইগারদের। ডাম্বুলার রাঙগিরি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ অভিষেক টি-২০ ম্যাচ খেলল। ম্যাচটিকে হাফসেঞ্চুরিতে রঙিন করেন লিটন। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু থেমে যান ৭৬ রানে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। ইনিংসের শেষ ওভারে দ্রুত প্রান্ত বদল করতে গিয়ে রান আউট হন শামীম ব্যক্তিগত ৪৮ রানে। লিটন ও শামীমের ৭৭ রানের জুটিতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৭ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৯৪ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। ম্যাচ জয়ের পর টাইগার অধিনায়ক প্রশংসায় ভাসান শামীম ও রিশাদকে, ‘চেষ্টা করছিলাম ভালো ক্রিকেট খেলার জন্য। শামীমকে কৃতিত্ব দিতে হবে, সে শুরুটা দেখিয়েছিল। কুশল মেন্ডিসকে দারুণ একটা রান আউট করেছে। রিশাদ দারুণ বোলিং করেছে। সে ভালো বল করলে আমরা ভালো করি। শরিফুলও দারুণ বল করেছে।’
ডাম্বুলায় এই প্রথম টি-২০ খেলল বাংলাদেশ। যদিও এখানে ৫টি ওয়ানডে খেলেছে। ২০১০ সালে এশিয়া কাপের ৩ ম্যাচেই হেরেছিল। ২০১৭ সালে দুটি ওয়ানডে খেলে একটি জিতেছিল। তামিম ইকবালের সেঞ্চুরিতে ৯০ রানে ম্যাচ জিতেছিল। আরেকটি ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় সবজির বাজার ডাম্বুলার রাঙগিরিতে এই প্রথম ২০ ওভারের ম্যাচ খেলল টাইগাররা। যদিও এখানে টি-২০ খেলা শুরুই হয়েছে গত বছর। ডাম্বুলায় খেলতে নামে লিটন বাহিনী পাল্লেকেলের প্রথম টি-২০ ম্যাচে একপেশে হারের তিক্ত স্বাদ নিয়ে। ১৫৪ রান করলেও ওই ম্যাচে ছিল না পঞ্চাশোর্ধ কোনো ইনিংস। সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। লিটন ব্যক্তিগত ৬ রানে সাজঘরে ফিরেছিলেন সুইপ খেলে। পাল্লেকেলেতে হারের পর টাইগার কোচ ফিল সিমন্স বলেছিলেন, লিটনের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে। আশা করেছিলেন, ডাম্বুলায় সামর্থ্যরে প্রমাণ দেবেন। কোচের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান টাইগার অধিনায়ক ৫০ বলে ১ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৬ রানের ইনিংস খেলে। যদিও ইনিংসটি একেবারে নি-িদ্র ছিল না। দুবার জীবন পেয়েছেন। ব্যক্তিগত ৩০ রানে লেগ স্পিনার ভান্ডারসেকে ‘ডাউন দ্য ট্রাক’ খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন। ওয়াইড বলটি ধরে স্ট্যাম্পিং করতে ব্যর্থ হন কুশল মেন্ডিস। এরপর ১০২ টি-২০ ম্যাচ ক্যারিয়ারের ১২তম হাফসেঞ্চুরি করেন ভ্যান্ডারসেকে ছক্কা মেরে। দ্বিতীয়বার জীবন পান ব্যক্তিগত ৫৬ রানে। লিটনের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস অপরাজিত ৮৩ রান। ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। ২ ওভারেই আউট হন দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন। প্রথম ওভারের শেষ বলে পারভেজ শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ দেন। তখনো রানের খাতা খোলেননি। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে দলীয় ৭ রানে আউট হন তানজিদ। প্রথম টি-২০ ম্যাচে দুজনে ৫ ওভারে ৪৩ রান যোগ করেছিলেন। ৭ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর লিটন ও তাওহিদ হৃদয় ৫৫ বলে ৬৯ রান যোগ করেন। হৃদয় ৩১ রান করেন ২৫ বলে। ৭৮ রানে চতুর্থ উইকেটের পতনের পর লিটন ও শামীম জুটি বাঁধেন। পঞ্চম উইকেট জুটিতে দুজনে যোগ করেন ৩৯ বলে ৭৭ রান। শামীম ৪৮ রান করেন মাত্র ২৭ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায়। ১৭৮ রানের টার্গেটে ১৫.২ ওভারে ৯৪ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ৮৩ রানের জয় দেশটির বিপক্ষে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড়। আগের বড় জয় ৪৫ রানে। অবশ্য যে কোনো দলের বিপক্ষে টাইগারদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে ৮৪ রানে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত টি-২০ জিতেছে ৭টি।