ফুটবলে মেয়েরা একের পর এক সাফল্য পাচ্ছেন। ক্রিকেটেও মেয়েদের এশিয়া কাপ জেতার রেকর্ড রয়েছে। হকিতে মেয়েদের কোনো খবরই ছিল না। সত্যি বলতে কি বাংলাদেশের মেয়েরা হাতে স্ট্রিক নিয়ে দৌড়াবে সেই সামর্থ্যও ছিল না। সেখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য তো প্রশ্নই ওঠে না। অথচ মেয়েরা অভিষেকেই ক্রীড়ামোদীদের মন জয় করেছে। এবারই প্রথমবার অনূর্ধ্ব-১৮ নারী এশিয়া কাপ হকিতে বাংলাদেশ প্রথমবার অংশ নিয়েছিল। শিরোপা বা রানার্সআপ না হলেও যা করেছে তা দেশের নারী হকির জন্য বড় প্রাপ্তি। গতকাল চীনের দাঝুতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে কাজাখস্তানকে ৬-২ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ তৃতীয় স্থান দখল করেছে। সে সঙ্গে গলায় ঝুলিয়েছে তামার পদক। অভিষেক আসরে মেয়েরা এত ভালো করবে তা কেউ ভাবেননি। জুনিয়ররা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে দেশকে প্রশংসায় ভাসিয়েছে। এমন প্রাপ্তি সামনে মেয়েদের আরও ভালো করতে উৎসাহ জোগাবে। বাংলাদেশের মেয়েরা যে হকি খেলে অনেকের কাছে ছিল অজানা। এশিয়া কাপে দারুণ ফল করে জানিয়ে দিল বাংলাদেশের মেয়েরাও পারে।
শক্তিশালী জাপানের বিপক্ষে ১১-০ গোলে হেরে বাংলাদেশ আসর শুরু করেছিল। এ অবস্থায় মেয়েরা যে ঘুরে দাঁড়াবে তা কারোর বিশ্বাস হচ্ছিল না। কিন্তু উজবেকিস্তান ও হংকংকে হারিয়ে টপ ফোরে জায়গা করে নেয়। এ পর্বে বাংলাদেশ চমক দেখাতে পারেনি। চীনের কাছে ৯-০ ও কাজাখস্তানের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করে। সেই কাজাখস্তানকে ৬-২ ব্যবধানে হারিয়ে তৃতীয় হয়ে তামার পদক জিতেছে বাংলাদেশ। ম্যাচ জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রাখেন আইরিন রিয়া। তিনি ১২, ১৮ ও ২০ মিনিটে টানা ৩ গোল দিয়ে হ্যাটট্রিক করেন। বাকি ৩ গোল করেন অধিনায়ক শারিকা রিমন, কনা আক্তার ও রাইশা রিশি। বাংলাদেশ জিতলেও প্রথমে গোল করে এগিয়ে যায় কাজাখস্তান। ৯ মিনিটে আমানগেন্ডি গোলটি করেন। তিন মিনিট ব্যবধানে সমতা ফেরানোর পর বাংলাদেশকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ৫৯ মিনিটে জেনিয়ার কাজাখস্তানের আরেকটি গোল করলেও বড় ব্যবধানে হেরে মাঠ ছাড়ে। জয়ের পর বাংলার মেয়েরা বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। ম্যাচের সেরা পুরস্কার জেতেন বাংলাদেশের আইরিন। মেয়েরা পারলেও বাংলাদেশ পুরুষ দল ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গতকাল তারা ৫-২ গোলে হেরে যায় মালয়েশিয়ার কাছে।