শনিবার ভারতের ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন। সেক্ষেত্রে দেশের ৫৪৩ টি আসনের জন্য ভোট নেওয়া হবে মোট সাত দফায়। আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া। গণনা ৪ জুন।।
লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি ওড়িশা, সিকিম, অন্ধ্রপ্রদেশ ও অরুণাচল প্রদেশ- ভারতের এই চার রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচনেরও নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে কমিশন। কিন্তু সেই তালিকায় বাদ জম্মু-কাশ্মীর। লোকসভার সাথে ভারতের এই কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলে বিধানসভার ভোট নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে কমিশন। কারণ হিসেবে নিরাপত্তাজনিত বিষয়টি উল্লেখ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার।
আর তাতেই হতাশ জম্মু-কাশ্মীরের মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলি। নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগেই কমিশনের বেঞ্চ সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীর পরিদর্শন করে এবং সেখানকার রাজনৈতিক দলগুলির সাথে বৈঠকও করে। ওই বৈঠকেই লোকসভা ভোটের সাথেই বিধানসভার ভোট করারও দাবি জানিয়েছিল তারা। আলাদা করে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের সঙ্গেও বৈঠক করে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ।
কিন্তু শীর্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তা জানান, সমগ্র জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনই নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে একযোগে লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচন করতে অস্বীকার করেছে। যদিও তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাপ্যতা থাকার পরেই রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন করা হবে।
বিশদভাবে তিনি বলেন, 'একটি বিধানসভা আসনের জন্য গড়ে ১০ থেকে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, এর অর্থ ৯০ টি বিধানসভার আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা হবে ১ হাজার। জম্মু-কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে, প্রতিটি প্রার্থীকে যদি কমপক্ষে দুটি বাহিনী দিতে হয়, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত বাহিনী প্রয়োজন। যেটা এই মুহূর্তে কোনভাবেই সম্ভব নয়।'
সর্বশেষ ২০১৪ সালে জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সরকারের মেয়াদ সম্পূর্ণ হওয়ার পর থেকেই গত প্রায় কয়েক বছর ধরে, এই অঞ্চলে কোন নির্বাচিত সরকার নেই। সেই বিষয়টি উত্থাপন করে শ্রীনগরের সাংসদ ফারুক আব্দুল্লাহ আরো বলেন, '২০১৪ সালের পর জম্মু-কাশ্মীরে আর কোনো বিধানসভা নির্বাচন হয়নি। সেখানে জনপ্রতিনিধিদের পরিবর্তে, লেফটেন্যান্ট গভর্নর রাজ্য শাসন করছে। জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভার নির্বাচন অস্বীকার করার কারণটা কি? নিশ্চয়ই কিছু ভুল আছে যার কারণে সেখানে বিধানসভা নির্বাচন করাতে দেরি হচ্ছে।'
জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) সভাপতি মেহেবুবা মুফতির উপদেষ্টা ও কন্যা ইলতিজা মুফতি বলেন 'জম্মু-কাশ্মীর থেকে সব কিছুই কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই আমরা নির্বাচনের জন্য ভিক্ষা করব না।'
জম্মু-কাশ্মীরে মোট লোকসভার আসন পাঁচটি। উপত্যকায় মোট ৫ দফায় নির্বাচন হবে। আগামী ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় উধমপুর কেন্দ্রে, ২৬ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় জম্মু কেন্দ্রে, ৭ মে তৃতীয় দফায় অনন্তনাগ কেন্দ্রে, ১৩ মে চতুর্থ দফায় শ্রীনগর এবং ২৬ মে পঞ্চম দফায় বারামুল্লাহ কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল