২১ এপ্রিল, ২০২৪ ০২:৩৪

প্রথম দফার ভোট একতরফাভাবে এনডিএ’এর পক্ষেই যাবে: আশাবাদী মোদি

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

প্রথম দফার ভোট একতরফাভাবে এনডিএ’এর পক্ষেই যাবে: আশাবাদী মোদি

শুক্রবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। সকাল ৭ টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ, চলে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। দেশটির ৫৪৩ আসনের মধ্যে প্রথম দফায় ২১টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের ১০২টি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে সাত দফার নির্বাচনে এই দফাতেই সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হয়। 

দেশটির নির্বাচন কমিশন প্রাথমিক রিপোর্টে জানিয়েছে, গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে ত্রিপুরায়, ৭৯.৯০ শতাংশ। এরপরেই সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এরাজ্যে ভোট দানের শতকরা হার ৭৭.৫৭ শতাংশ। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে বিহারে, মাত্র ৪৭.৪৯ শতাংশ। গোটা দেশে গড় ভোটদানের হার ৬৪ শতাংশ। 

শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় এক বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, গোটা দেশে তাপপ্রবাহের মধ্যেও এত বেশি সংখ্যায় ভোট দানের ঘটনা নজিরবিহীন। 

দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এত বেশি সংখ্যায় ভোট প্রদানের ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, প্রথম দফায় বিজেপির নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট’ (এনডিএ) এর পক্ষেই একতরফাভাবে এই ভোট পড়েছে। 

শনিবার মহারাষ্ট্রের নানডের এলাকায় এক নির্বাচনী প্রচারণায় ভোটারদের উদ্দেশ্যে মোদি বলেন, ‘যারা গতকাল (শুক্রবার) ভোট দিয়েছিলেন, বিশেষ করে প্রথম ভোটারদের- আমার তরফ থেকে তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ভোট প্রদানের পর বুথ লেভেল থেকে যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে এবং আমি যে তথ্য পাচ্ছি, তাতে আমার বিশ্বাস মজবুত হচ্ছে, প্রথম দফায় এনডিএ’এর পক্ষেই একতরফাভাবে ভোট দান হয়েছে। এনডিএ’এর জয় নিশ্চিত করায় আমি মাথানত করে আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। 

গণতন্ত্রের শ্রেষ্ঠ উৎসবে দেশবাসীকে আরও বেশি সংখ্যায় শামিল হওয়ার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কিন্তু যারা প্রথম দফায় ভোট দেননি, তাদেরকে বলবো ভোট প্রদান গণতন্ত্রের শক্তিশালী মাধ্যম। আপনি যাকেই ভোট দিন না কেন, ভোট অবশ্যই দেবেন। ভোট দেওয়া নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনোরকম উদাসীনতা থাকা উচিত নয়। এটা ঠিক যে প্রচণ্ড গরম পড়েছে ফলে অনেক সমস্যা মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তারপর একদিকে বিয়ের মৌসুম, অন্যদিকে চাষিরাও মাঠে কাজ করছেন। তারপরেও আমরা যখন দেশের সেনা সদস্যদের দিকে তাকাই, তখন দেখব যেকোনো মৌসুমেই জওয়ানরা নিজেদের কর্তব্যে অবিচল থাকে, কারণ দেশের জন্য তারা এই কাজ করে। আমার মনে হয় ভোটারদের মধ্যেও এরকম মনোভাব থাকা উচিত। তাদের ভাবা উচিত, ভোট দিয়ে আমি কারো উপকার করছি না বরং ভোট দিয়ে আমি আমার দেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করছি। 

বিরোধীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা- আজ না হলে কাল, কাল না হলে পরশু- আপনারা নিশ্চয়ই সুযোগ পাবেন। তাই বিরোধীরা- যাদের পরাজয় নিশ্চিত- তাদের দলের কর্মীদের বলতে চাই, ভোটারদের ভোট দিতে আপনারাও উদ্বুদ্ধ করুন। কেননা আগামী ২৫ বছর ভারতের মহত্ত্ব প্রমাণ করবে আর যার জন্য ভোটের শতকরা হার বৃদ্ধি করাটা খুবই জরুরি।

বিরোধীদলের জোট ‘ইন্ডিয়া’কে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী এটাও বলেছেন, নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতেই বিরোধীরা এই জোট গঠন করেছে। ফলে প্রথম দফার নির্বাচনে ভোটাররা সম্পূর্ণভাবে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। নির্বাচনে লড়াই করার মতো প্রার্থী তাদের নেই। জোটের নেতারাই একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছেন। 

প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন, যারা নিজেরাই একে অপরকে বিশ্বাস করেন না, আপনারা কি তাদের বিশ্বাস করে ভোট দেবেন? 

প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর পাল্টা তাকে নিশানা করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তার প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী কীভাবে বলতে পারেন, প্রথম দফার ভোটে ভোটাররা কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটকে প্রত্যাখ্যান করেছে। 

এদিন কেরালার ত্রিশূরে একটি নির্বাচনী প্রচারণার ফাঁকে প্রিয়াঙ্কা প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচনের ফলাফল এখনও বের হয়নি, তার আগেই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কীভাবে এটা জানলেন? আমি জানি না তারা এতটা আত্মবিশ্বাসী কীভাবে হলেন? 

কংগ্রেস নেত্রী এটাও প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি দাবি করে, এই নির্বাচনে তারা ৪০০ আসন পাবেন? আমরা যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই মানুষ বলছে তারা পরিবর্তন চায়। আমি নিশ্চিত যে পরিবর্তন এবার আসবেই।

উল্লেখ্য, মোট সাত দফার লোকসভার নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোট গ্রহণ ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় দফায় ৭ মে, চতুর্থ দফায় ১৩ মে, পঞ্চম দফায় ২০ মে, ষষ্ঠ দফায় ২৬ মে এবং সপ্তম শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা আগামী ৪ জুন অনুষ্ঠিত হবে।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর