২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:৫১
মার্কিন সিনেটে পাস হলো ‘ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিলেন্স অ্যাক্ট’

যুক্তরাষ্ট্রে পরোয়ানা ছাড়াই বিদেশিদের ওপর গোপনে নজরদারির ক্ষমতা বাড়ছে দু’বছর

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে পরোয়ানা ছাড়াই বিদেশিদের ওপর গোপনে নজরদারির ক্ষমতা বাড়ছে দু’বছর

মার্কিন সিনেটে পাস হলো ‘ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিলেন্স অ্যাক্ট’

গ্রেফতারি পরোয়ানা অথবা আদালতের অনুমতি ছাড়াই মার্কিন পুলিশের নজরদারির ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ইউএস সিনেটে পাস হলো ‘ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিলেন্স অ্যাক্ট (ফিসা)। গতকাল শনিবার ৬০-৩৪ ভোটে পাস হয় বিলটি। 

এটি হচ্ছে ফিসার ৭০২ সেকশনের সম্প্রসারণ। এর আগে গত ১২ এপ্রিল কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে তা পাস হয়। বিলটি এখন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের স্বাক্ষর পেলেই তা আইনে পরিণত হবে।

এই বিধি দু’বছরের জন্য কার্যকর থাকবে। ৯/১১ এর মতো সন্ত্রাসী হামলা এড়াতে এমন বিধির বিকল্প নেই বলে প্রশাসন ও রাজনীতিকেরা মনে করলেও মানবাধিকার নিয়ে কর্মরত প্রায় সকল সংগঠনই একযোগে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাসের পর শতাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এক দরখাস্তে ইউএস সিনেট লিডার চাক শ্যুমারকে তা সিনেটে পাস না করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু নিউইয়র্কের সিনেটর চাক শ্যুমারও আরেকটি ৯/১১ ঘটানোর আগেই তা বন্ধের যুক্তি দেখিয়ে এই বিধি আরো দু’বছরের জন্যে বহাল রাখার কথা বলেছেন। 

চাক শ্যুমার বলেন, এটা খুব সহজ ছিল না। নানাজনের নানামত ছিল। তবে আমরা সবাই জানি ফিসাকে নবায়ন করা সম্ভব না হলে তা ছিল খুবই বিপজ্জনক। সন্ত্রাস, মাদকপাচার, সহিংস চরমপন্থা থামিয়ে দেওয়া দমন করাটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেজন্য সিনেটের সকল সহকর্মীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এমনকি ভালো দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পন্নের জন্য।

এর ফলে ইমিগ্র্যান্টদের ওপর নজরদারিসহ সন্দেহজনক ব্যক্তি ও কোম্পানির তথ্য, ড্যাটা সেন্টারের তথ্য, কমার্শিয়াল রিয়েল এস্টেট মালিকদের তথ্য, কম্যুনিকেশন্স ইক্যুইপমেন্ট অপারেটর মালিকদের তথ্য চাওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এফবিআইসহ সকল গোয়েন্দা সংস্থাকে। অর্থাৎ যে কাউকে গোপনে নজরদারির আওতায় আনা যাবে, প্রয়োজনে তল্লাশি করা যাবে তাদের বাড়ি-ঘর, বাড়ির কাজের লোক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র। 

কম্প্যুটার, ফোন, ইন্টারনেট, ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রামেও ঢুকতে পারবে কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই। মুসলমান ইমিগ্র্যান্টরা (গ্রিনকার্ডধারী/সিটিজেন) নিজ নিজ দেশ ভ্রমণের পর যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার সময় পোর্ট অব এনট্রিতে তাদের নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। আমেরিকান সিভিল রাইটস গ্রুপের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, এই বিলের মূল টার্গেট হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গ এবং মুসলমানেরা। সন্দেহভাজন ইমিগ্র্যান্টদের আত্মীয়-স্বজনকেও (তারা যেখানেই থাকুন না কেন) এফবিআই জিজ্ঞাসাবাদ, এমনকি গ্রেফতারও করতে পারবে এই বিল আইনে পরিণত হলে। 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড এক বিবৃতিতে ৭০২ ধারাকে অপরিহার্য বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই বিধিকে নবায়নের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অবস্থিত নন-সিটিজন (অর্থাৎ যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন) তেমন সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ব্যাপারেও এফবিআইকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করার ক্ষমতা দিল। আমেরিকানদের নাগরিক স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিচার বিভাগ গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো কোডিফাই করতে পারবে।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর