জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান কাঠামোকে পুরানো বলে অভিহিত করে, এটি সংস্কার করার এবং আফ্রিকাকে একটি স্থায়ী আসন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই মহাদেশের এক বিলিয়নেরও (১০০ কোটি) বেশি মানুষের জন্য নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী প্রতিনিধিত্বের অভাব মেনে নেওয়া যায় না।
সোমবার একটি উচ্চ পর্যায়ের বিতর্কে নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেওয়ার সময় গুতেরেস উল্লেখ করেন, বিশ্বের পরিবর্তনের সাথে সাথে নিরাপত্তা পরিষদের গঠন সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মেনে নিতে পারি না, বিশ্বের প্রভাবশালী শান্তি ও নিরাপত্তা সংস্থায় একটি বিশাল মহাদেশের জন্য স্থায়ী কণ্ঠস্বর নেই।
বর্তমান UNSC-তে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য আছে—চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য, যাদের ভেটো ক্ষমতা রয়েছে। অন্য ১০টি অস্থায়ী আসন আঞ্চলিকভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি আসন আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলির জন্য নির্ধারিত।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডেনিস ফ্রান্সিসও এই বিতর্কে বলেন যে, আফ্রিকার নিরাপত্তা পরিষদে স্পষ্টতই কম প্রতিনিধিত্ব থাকা একটি ভুল, যা ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তির নীতির বিরুদ্ধে যায়। তিনি বলেন, জাতিসংঘকে বর্তমান বিশ্বের প্রতিফলন করতে হবে, ৮০ বছর আগের বিশ্বের নয়।
সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাডা বায়ো UNSC-তে আফ্রিকার জন্য দুটি স্থায়ী আসন এবং আরও দুটি অস্থায়ী আসন দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আফ্রিকান ইউনিয়ন আফ্রিকার স্থায়ী সদস্যদের নির্বাচন করবে। আফ্রিকা ভেটো ক্ষমতা বিলুপ্ত করতে চায়। তবে, যদি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলি ভেটো ক্ষমতা বজায় রাখতে চায়, তাহলে এটি নতুন স্থায়ী সদস্যদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে হবে।
কেপ টাউনের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্লোস লোপেস, যিনি পূর্বে আফ্রিকান ইউনিয়নের উচ্চ প্রতিনিধি ছিলেন, আল জাজিরাকে জানান, আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর প্রচেষ্টা নতুন নয়, তবে বর্তমান ভূ-রাজনীতি এটিকে আরও অনুকূল করে তুলেছে। লোপেস বলেন, আফ্রিকা এখন নিরাপত্তা পরিষদে তাদের অবস্থান শক্ত করতে চাইছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল