কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় পুরো কলকাতা এখন উত্তাল। এই বর্বর ঘটনার পর ক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা আন্দোলনে নেমেছেন। বিভিন্ন হাসপাতালে কনিষ্ঠ ও আবাসিক চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করছেন, এবং তাদের এই প্রতিবাদ এখন ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের সীমানা পেরিয়ে অন্যান্য রাজ্যেও।
দিল্লির এইমস থেকে শুরু করে মুম্বাই, কর্ণাটক এবং মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন হাসপাতালেও চলছে কর্মবিরতি।
আন্দোলনকারীরা দাবি তুলেছেন, এই নির্মম হত্যাকাণ্ড একজনের দ্বারা সম্ভব নয়, এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টও তেমনটাই নির্দেশ করে। তারা জড়িত সকলকে খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির দাবি করছেন। অপরাধীরা ধরা না পড়া পর্যন্ত তাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা।
ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিহত চিকিৎসকের পরিবারের সাথে দেখা করেন এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করতে পুলিশের ওপর চাপ দেন। তবে আন্দোলনকারীরা এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন এবং সিবিআই তদন্তের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরছেন।
এই পরিস্থিতির মাঝে আর জি কর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ পদত্যাগ করলেও রাজ্য সরকার তা গ্রহণ না করে তাকে অন্য একটি হাসপাতালে পদায়ন করেছে, যা আন্দোলনকারীদের আরও ক্ষুব্ধ করেছে। তারা তার অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানাচ্ছেন।
কলকাতার নাগরিক সমাজও এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে। অভিনেতা, লেখক, এবং সমাজের বিশিষ্টজনেরা বিভিন্ন মিছিলে অংশ নিচ্ছেন, যা প্রমাণ করে, এই ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয় গত শুক্রবার। আর জি কর মেডিকেল কলেজের চতুর্থ তলায় দায়িত্ব পালন শেষে বিশ্রাম নিতে যাওয়া এক নারী চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ওই চিকিৎসক উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাসিন্দা ছিলেন এবং পোস্টগ্র্যাজুয়েট অধ্যয়নরত অবস্থায় এই মর্মান্তিক পরিণতির শিকার হন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল