চীনের হাইনান প্রদেশের হাইকুতে এক ৫৮ বছর বয়সী ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অস্বাভাবিক এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন। এক রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গিয়ে তিনি অনুভব করেন, তার শ্বাসনালিতে কিছু একটা হামাগুড়ি দিচ্ছে। প্রথমে ভেবেছিলেন সাধারণ কোনো অস্বস্তি, কিন্তু পরক্ষণেই টের পান, জিনিসটি তার শ্বাসনালি দিয়ে নেমে যাচ্ছে। তবে সেটা কী, তা বোঝা তার জন্য কঠিন ছিল।
শুরুতে বিষয়টি নিয়ে খুব একটা চিন্তিত না হয়ে তিনি আবার ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন প্রতিদিনের মতো নিজের কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যান। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করতে শুরু করেন। তার মুখ থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বের হতে থাকে, যা কোনোভাবেই দূর হচ্ছিল না। কাশির সঙ্গে বের হতে থাকা হলুদ রঙের থুতু দেখে অবশেষে তিনি হাসপাতালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
হাইনানের একটি হাসপাতালে নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন তিনি। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তেমন কিছু ধরা না পড়লেও চিকিৎসকেরা বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান হন। তাকে ফুসফুস বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়। বুকের সিটি স্ক্যানে দেখা যায়, তার ফুসফুসের নিচের অংশে একটি অদ্ভুত ছায়া দেখা যাচ্ছে। এই ছায়ার কারণ অনুসন্ধানের জন্য ব্রঙ্কোস্কোপি করার পর দেখা যায়, তার বায়ুনালিতে একটি তেলাপোকা আটকে আছে!
চিকিৎসক লিন লিং জানান, তেলাপোকার ডানা কফ দিয়ে ঢাকা ছিল, যা পরিষ্কার করার পরই সেটি দৃশ্যমান হয়। ধীরে ধীরে সেটি শ্বাসনালি থেকে বের করে আনা হয়। তেলাপোকাটি সরানোর পর রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং মুখের দুর্গন্ধও চলে যায়। একদিন পর তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
চিকিৎসকেরা এই ঘটনাকে অত্যন্ত বিরল বলে উল্লেখ করেন এবং মানুষকে সতর্ক করেন যে, শারীরিক কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল