নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ব্রিটিশ সরকার। আগামী এক দশকে হাউজহোল্ড নির্যাতনের সংখ্যা অর্ধেক করতে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের জরুরি পরিসেবা নম্বর ৯৯৯ ব্যবহার করে ভুক্তভোগীরা কন্ট্রোল রুমে সরাসরি বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলতে পারবেন। এই পদক্ষেপটি রেনিম ল-এর একটি অংশ।
২০১৮ সালে ২২ বছর বয়সী রেনিম ওউদেহ এবং তার মা সলিমকে নির্মমভাবে হত্যা করে তার মায়ের প্রাক্তন হাসবেন্ড এমএস ওউদেহ। এরপর সরকার হাউজহোল্ড নির্যাতনের বিষয়ে নতুন একটি আইন পাশ করে যা রেনিম ল’ নামে পরিচিত।
খবরে বলা হয়েছে, সরকার একটি নতুন হাউজহোল্ড টর্চার সুরক্ষার পাইলট প্রোগ্রামের ঘোষণা দিয়েছে। এতে চিহ্নিত নির্যাতনকারীদের ভুক্তভোগী থেকে দূরে থাকতে বাধ্য করা হবে। আদেশ মানতে ব্যর্থ হলে আরও কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
হোম সেক্রেটারি ইভেট কুপার জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পুলিশ রেডি থাকবে এবং যেকোনো ধরনের ইমার্জেন্সি সিচুয়েশনে পুলিশ সাপোর্ট দিবে। সরকারের টার্গেট হলো হাউজহোল্ড নির্যাতনের বিষয় গুলো বিশেষজ্ঞ কর্তৃক ডিল করা। আর এতে সরাসরি কল দিয়ে পরামর্শ নিতে পারবে ভুক্তভোগীরা। এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তরা দ্রুত রেসপন্স পাবে। এই প্রকল্পটি আগামী বছরের শুরু থেকেই নির্বাচিত পুলিশ সদস্যদের নিয়ে চালু করা হবে। তবে এই পাইলট প্রোগ্রামে কোন বাহিনী অংশ নিচ্ছে সে সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত জানানো হয়নি।
মিসেস কুপার নতুন এই পদক্ষেপগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ এবং নিজের ব্যক্তিগত অগ্রাধিকার হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সরকার জানিয়েছে, গত বছর গড়ে প্রতি ঘণ্টা প্রায় ১০০টি হাউজহোল্ড টর্চার সম্পর্কিত অপরাধ রেকর্ড করা হয়েছে। একটি অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের রক্ষার পরিবর্তে মৃত্যুতে আরও অবদান রেখেছে। কারণ তারা যথা সময়ে এবং সঠিক প্রক্রিয়ায় রেসপন্স করেনি। লেবার সরকার এখন হাউজহোল্ড নির্যাতন বন্ধে একটি ডেটিকেটেড পুলিশ ফোর্স গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। নারী ও মেয়েদের সুরক্ষার জন্য আরেকটি নতুন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে যা আগামী নভেম্বরে চালু হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় নির্যাতনের শিকার নারী নিপীড়কের সাথে থাকতে বাধ্য হয় কিংবা আশেপাশে নিপীড়ক থাকে। এতে ভুক্তভোগী মানসিকভাবে ট্রমায় পড়া সহ আবারও নির্যাতনের ঝুঁকিতে থাকে। বর্তমানে ২৮ দিনের মধ্যে কোনো নির্যাতনকারী ভুক্তভোগীর সাথে দেখা করতে পারবে না। এবার নতুন উদ্যোগের আওতায় চিহ্নিত অপরাধী এলাকা পরিবর্তন করলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষকে তার লোকেশন জানানো হবে। পাশাপাশি অপরাধীদের ইলেকট্রিক ট্যাগিং সিস্টেমের আওতায় আনা সহ ভুক্তভোগীর সাথে দেখা না করার কোনো সর্বোচ্চ সময়সীমা থাকবে না। এসব আদেশ না মানলে অপরাধীকে পাঁচ বছরের জন্য কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হবে। ধারণা করা হচ্ছে সরকারের নতুন এসব উদ্যোগ সহিংসতা, লাঞ্ছনা এবং জবরদস্তিমূলক আচরণ বন্ধে বিশেষভাবে কাজে আসবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত