লেবাননে পেজার বিস্ফোরণের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতের। তার নাম রিনসন হোসে। ৩৭ বছরের এই যুবকের জন্ম কেরালার ওয়েনাদে। পড়াশোনাও কেরালায়। পরবর্তীতে তিনি নরওয়েতে চলে যান। বর্তমানে সেখানকার নাগরিক তিনি। পেজার বিস্ফোরণের তদন্তে এই ভারতীয় বংশোদ্ভূতেরই নাম উঠে আসছে।
কীভাবে এই ভারতীয় বংশোদ্ভূতের নাম জড়িয়ে গেল লেবাননের ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায়? হাঙ্গেরির একটি সংবাদমাধ্যম ‘টেলেক্স’-এ দাবি করা হয়েছে, লেবাননে যে পেজারগুলি বিস্ফোরণ হয়েছে, সেগুলি বিক্রি করেছিল ‘নর্টা গ্লোবাল লিমিটেড’ নামে বুলগেরিয়ার একটি সংস্থা।
‘টেলেক্স’-এ আরও দাবি করা হয়েছে, হিজবুল্লাহ কয়েক হাজার পেজারের বরাত দিয়েছিল বুলগেরিয়ার ওই সংস্থাকে। ঘটনাচক্রে, বুলগেরিয়ার ওই সংস্থাটির কর্ণধার আবার রিনসন। আর এখান থেকেই সন্দেহ তদন্তকারীদের। তা হলে কি এই ঘটনার সঙ্গে ভারতীয় বংশোদ্ভূতের সরাসরি কোনও যোগ রয়েছে? এই প্রশ্ন জোরালো হতে শুরু করেছে।
‘দ্য ক্র্যাডল ডট কো’-এর তথ্য বলছে, বুলগেরিয়ার সংস্থার সঙ্গে লেবাননের পেজার বিস্ফোরণের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় সেখানেও তোলপাড় চলছে। সে দেশের নিরাপত্তা সংস্থা ‘ডিএএনএস’ বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করেছে যে, কী ভাবে বুলগেরিয়ার সংস্থার নাম জড়িয়ে গেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিবিএস নিউজ-এর প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালের এপ্রিলে নর্টা গ্লোবাল লিমিটেড নামে সংস্থাটিকে বুলগেরিয়ায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এই সংস্থাটির কর্ণধার নরওয়ের নাগরিক, যিনি ঘটনাচক্রে আবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত।
‘অনমনোরমা’ নরওয়ের বেশ কয়েকটি সূত্র মারফত জানতে পেরেছে যে, রিনসন একটি কনসালটেন্সি সংস্থা চালাতেন। নরওয়েতে মালয়ালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে অত্যন্ত পরিচিত মুখ তিনি। নিজের উদ্যোগে বিভিন্ন উৎসব এবং ফুটবল খেলার আয়োজনও করতেন। ‘অনমনোরমা’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, রিনসনের লিঙ্কডইন প্রোফাইলে যে তথ্য রয়েছে তা হল, ২০২২ সাল থেকে তিনি ডিএ মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত। ‘নর্টালিঙ্ক’ নামে একটি সংস্থার কর্ণধার। এটি মূলত একটি তথ্যপ্রযুক্তি এবং কনসাল্টিং সংস্থা। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুদুচেরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছেন রিনসন। আবার অসলো মেট্রোপলিটান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সমাজকল্যাণ এবং স্বাস্থ্যনীতির বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। শিক্ষকতাও করেছেন। রিনসনের সংস্থা ‘নর্টালিঙ্ক’-এর ভুয়া সংস্থাই নর্টা গ্লোবাল লিমিটেড বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল