চীন ইয়ারলুং সাংপো নদীর নিম্নাঞ্চলে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রকল্পটি তিন গর্জেস বাঁধের চেয়ে তিন গুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। চীনা কর্তৃপক্ষ এটিকে পরিবেশ-সংরক্ষণমূলক এবং স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের সহায়ক হিসেবে অভিহিত করলেও, এ প্রকল্প নিয়ে পরিবেশবিদ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাঁধটি নির্মাণের ফলে তিব্বতের স্থানীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে স্থানান্তরিত হতে হবে এবং এর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অতীতে তিব্বতের বিভিন্ন অঞ্চলে চীনের নির্মিত বাঁধগুলো নিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ দেখা গেছে। সম্প্রতি, গাংতুও বাঁধ প্রকল্পের বিরোধিতা করায় তিব্বতীয়দের আন্দোলন দমন করতে চীন ব্যাপক গ্রেফতার ও নির্যাতন চালিয়েছে।
ইয়ারলুং সাংপো নদী ভারতের অরুণাচল প্রদেশ হয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়। নতুন বাঁধটি চীনের এই নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাড়াবে, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর জলবণ্টন ও অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ২০২০ সালে ভারত বড় একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা করে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছিল।
বাঁধটি নির্মাণস্থল একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত। চীনের ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা আগে সতর্ক করেছিলেন যে, এ ধরনের প্রকল্পের কারণে ভূমিধস ও কাদা প্রবাহের মতো বিপর্যয় আরও বেড়ে যেতে পারে।
প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ইউয়ান বা ১২৭ বিলিয়ন ডলার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, নদীর গভীর গিরিখাত এবং খাড়া ঢালের কারণে প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ারিং চ্যালেঞ্জও বিশাল।
চীন এ প্রকল্পকে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলেও, এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিবেশগত এবং কূটনৈতিক উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল