আফগানিস্তানে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের পর আবারও দুটি শক্তিশালী আফটারশক আঘাত হেনেছে। মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে পূর্ব আফগানিস্তানে এই আফটারশক দুটি নতুন করে আতঙ্ক ও ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।
ভয়াবহ ভূমিকম্পে গত চার দিনে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২,২০৫ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৩,৬৪০ জন। তালেবান প্রশাসনের বরাতে বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
রয়টার্সের একজন প্রতিবেদক জানিয়েছেন, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নানগারহার প্রদেশে বারবার আফটারশক অনুভূত হচ্ছে। তবে সব ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ বিবরণ এখনো পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ৫.৪ মাত্রার একটি আফটারশক আঘাত হানে, যার গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠের মাত্র ১০ কিলোমিটার। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই বৃহস্পতিবার রাতেও একটি আফটারশক অনুভূত হয়।
এই সপ্তাহের শুরুতে, রবিবার মধ্যরাতের আগে ৬ মাত্রার প্রধান ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এটি সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তানের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নানগারহার এবং কুনার প্রদেশে এই কম্পন ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
পরবর্তীতে মঙ্গলবার ৫.৫ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্পে উদ্ধার কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। পাহাড় ধসে পড়ায় অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, ফলে দুর্গম অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অধিকাংশ বাড়ি পাথর, কাদা ও কাঠ দিয়ে তৈরি হওয়ায় সেগুলো সহজেই ধসে পড়ে। আফটারশকের ভয়ে বহু পরিবার এখনও নিজেদের ভেঙে পড়া ঘরে না ফিরে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।
নানগারহার স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র নকিবুল্লাহ রহিমি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতের আফটারশকের উপকেন্দ্র ছিল শিবা জেলায়, যা পাকিস্তান সীমান্তের খুব কাছে। কিছু প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির খবর ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে।
তালেবান সরকারের তথ্য অনুযায়ী, দুই প্রদেশে মোট ৬,৭০০টির বেশি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। উদ্ধারকারীরা বৃহস্পতিবারও ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছেন।
আক্রান্তরা বর্তমানে খাদ্য, চিকিৎসা ও নিরাপদ আশ্রয়ের চরম সংকটে ভুগছেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জরুরি মানবিক সহায়তার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তান একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। অধিকাংশ ভূমিকম্প ঘটে হিন্দুকুশ পর্বতমালায়, যেখানে ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ ঘটে। ফলে মাঝেমধ্যেই ভয়াবহ কম্পনের শিকার হয় দেশটি।
সূত্র : রয়টার্স।
বিডি-প্রতিদিন/শআ