আগামীকাল সোমবার ব্রাজিলের আমাজন অঞ্চলের বেলেম শহরে বিশ্বনেতারা জাতিসংঘের ৩০তম জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে একত্র হচ্ছেন। দুই সপ্তাহব্যাপী এই সম্মেলনে ১৯৯২ সালের জাতিসংঘের জলবায়ু চুক্তির সদস্যভুক্ত সকল দেশ অংশ নেবে।
এবারের সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ‘নতুন প্রতিশ্রুতি নয়, বরং আগের দেওয়া অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন করা’। বিশেষ করে জ্বালানি হিসেবে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার ধীরে ধীরে বন্ধ করার যে অঙ্গীকার কপ-২৮ এ করা হয়েছিল, তা বাস্তবে রূপ দিতে এবার জোর দেওয়া হবে।
এছাড়া বিশ্বের বনভূমি সংরক্ষণ, বিশেষত আমাজন অঞ্চলের বন ও সেখানকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন রক্ষা, এবারের আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।
বেলেমকে আয়োজক শহর হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণও এটাই। এই শহরকে বলা হয় ‘আমাজন রেইনফরেস্টের প্রবেশদ্বার’। ব্রাজিল চায়, এবারের আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বের বনাঞ্চল ও পরিবেশের গুরুত্ব প্রতীকীভাবে তুলে ধরতে।
উল্লেখ্য, শুধু আমাজন রেইনফরেস্টেই প্রায় ৪০০টিরও বেশি আদিবাসী গোষ্ঠী বসবাস করে, যা অঞ্চলটির মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-দশমাংশ। এসব গোষ্ঠী বন উজাড়, খনি, কৃষি ও জ্বালানি আহরণের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
গবেষক ও পরিবেশবিদদের মতে, কপ-৩০ হবে প্রথম সম্মেলন যেখানে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্য অর্জনে বিশ্ব ব্যর্থ হয়েছে স্বীকার করা হবে।
সম্মেলনের প্রথম সপ্তাহে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা নিজেদের অগ্রাধিকার ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরবেন। বিভিন্ন দেশ ও কোম্পানি নতুন অর্থায়ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি ঘোষণা করবে। দ্বিতীয় সপ্তাহে জাতীয় পর্যায়ের মন্ত্রী ও নীতিনির্ধারকেরা যোগ দেবেন—যেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও সমঝোতা গঠনের কাজ হবে।
এবারের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে G77 + China, BASIC (Brazil, South Africa, India, China) এবং ছোট দ্বীপরাষ্ট্র জোট ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু নেতৃত্বে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে, আর সেই জায়গা পূরণে এখন চীন ও ব্রাজিল ক্রমশ প্রভাব বাড়াচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা রোধে এবারের সম্মেলন কার্যকর সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবে কি না—এটাই এখন মূল প্রশ্ন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল