ইসরায়েল গাজা সিটির প্রায় দশ লাখ ফিলিস্তিনি বাসিন্দাকে অবিলম্বে শহর ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। সামরিক বাহিনী গাজা সিটিতে তীব্র স্থল অভিযান শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর আরবি মুখপাত্র আভিচায় আদরাঈ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, গাজা সিটির সব বাসিন্দা, বিশেষ করে পুরাতন শহর এবং পূর্বের তুফাহ থেকে পশ্চিমের সমুদ্রতীরের বাসিন্দাদের প্রতি বলছি, আইডিএফ হামাসকে পরাজিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং গাজা সিটি এলাকায় প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে কাজ করবে, যেমনটা তারা পুরো উপত্যকা জুড়ে করেছে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের নিরাপত্তার জন্য, অবিলম্বে রশিদ অক্ষ হয়ে আল-মাওয়াসির মানবিক অঞ্চলের দিকে চলে যান।
এই নির্দেশের সমর্থনে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলে প্রচারপত্র ফেলে। এসব প্রচারপত্রে একটি মানচিত্র ছিল, যেখানে বাসিন্দাদের উত্তর গাজা থেকে পশ্চিমে উপকূলের দিকে গিয়ে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হওয়ার পথ দেখানো হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার ফিলিস্তিনিদের গাজা সিটি খালি করার জন্য সতর্ক করে বলেন, এটি গাজা সিটিতে তীব্র স্থল অভিযানের মাত্র শুরু। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শহরটিতে বিমান হামলা বাড়িয়েছিল।
সম্প্রতি ইসরায়েল গাজা সিটিতে উঁচু ভবনগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। তারা গাজার বৃহত্তম এই শহরটি দখল করে হামাসকে পরাজিত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সামরিক বাহিনীর দাবি, তারা ইতোমধ্যে শহরটির ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
মঙ্গলবার পর্যন্ত গাজার প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে মাত্র ৭০ হাজার, অর্থাৎ ১০ শতাংশেরও কম মানুষ শহর ছেড়েছে বলে একজন জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এই কর্মকর্তা আরও জানান, এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ হাজার তাঁবু পুরো উপত্যকায় সরবরাহ করা হয়েছে। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে ১ লাখ তাঁবু সরবরাহের লক্ষ্য রয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল বিতর্কিত গাজা মানবিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৪ থেকে বাড়িয়ে ১৬ করার পরিকল্পনা করছে। যদিও এই নতুন কেন্দ্রগুলো এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি।
অনেক গাজা সিটির বাসিন্দা সিএনএনকে জানিয়েছেন, তারা বারবার বাস্তুচ্যুত হওয়ার চেয়ে নিজেদের বাড়িতে মরে যাওয়াকে বেশি শ্রেয় মনে করেন।
সূত্র: সিএনএন
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল