যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক স্কুলে সেলফোন নিষিদ্ধ হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগ বেড়েছে বলে দাবি করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। লাইব্রেরীতে বই পড়ার আগ্রহ বাড়ছে, ক্যাফেটেরিয়া ও খেলার মাঠে শিক্ষার্থীরা এখন নির্বিঘ্নে সময় কাটাচ্ছে। কয়েক মাস আগেও এ দৃশ্য খুব একটা দেখা যেত না; বরং শিক্ষার্থীদের ইউটিউব, ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রামে ডুবে থাকতে দেখা যেত।
শ্রেণীকক্ষে অনেকে লুকিয়ে টেক্সট, ই-মেল কিংবা ফেসটাইমে ব্যস্ত থাকায় পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছিল। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৫০টির মধ্যে ৩৫টি স্টেটের পাবলিক স্কুলে (কেজি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) সেলফোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর সুফল এখন স্পষ্ট হচ্ছে।
‘পিউ রিসার্চ সেন্টার’-এর সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, ৭৪% অভিভাবক এ সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ৬% বেশি। অন্যদিকে ‘ইউগভ’-এর জরিপে ৬৪% প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকান স্কুলে সেলফোন নিষিদ্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন।
লাইব্রেরীতে বই পড়ার আগ্রহ বেড়েছে
শিক্ষার্থীরা এখন লাইব্রেরী থেকে বেশি বই নিচ্ছে। ৩৫টি স্টেটের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর লাইব্রেরী থেকে বই নেয়ার সংখ্যা বেড়েছে ৩৯%। লাইব্রেরিয়ানরা বলছেন, “শিক্ষার্থীরা আবার পাঠাভ্যাসে ফিরছে। ভেবেছিলাম প্রযুক্তি সবকিছু গ্রাস করবে, কিন্তু তারা আবার বইয়ের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে।”
শিক্ষক-অভিভাবকেরা সন্তুষ্ট
সেলফোন নিষিদ্ধ হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগ বেড়েছে, হোমওয়ার্ক করার আগ্রহও দৃশ্যমান। ফলে কৃতিত্ব প্রদর্শনে প্রতিযোগিতা বাড়বে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।
ফ্লোরিডা ছিল প্রথম স্টেট, যেখানে ২০২৩ সাল থেকে স্কুলে সেলফোন নিষিদ্ধ করা হয়। হিলসবরো কাউন্টি পাবলিক স্কুলের কমিউনিকেশনস প্রধান তানিয়া আর্জ বলেন, “শিক্ষার্থীরা এখন সেলফোনে সময় কাটানোর বদলে পড়াশোনার বিষয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছে।”
নিউইয়র্কেও কার্যকর
চলতি শিক্ষাবর্ষে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলেও সেলফোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় পাবলিক স্কুল সিস্টেমের আওতায় থাকা এক কোটি শিক্ষার্থী এখন ক্লাসরুম ও লাইব্রেরীতে বেশি মনোযোগী। হৈচৈ কমেছে, পরিবেশ হয়েছে শান্ত। অভিভাবকেরাও এতে খুশি।
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল জানিয়েছেন, ধাপে ধাপে এ সিদ্ধান্ত পুরো স্টেটে কার্যকর হবে। তবে ইন্টারনেটবিহীন ফোন ও স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত ল্যাপটপ-ট্যাবলেট ব্যবহার চালু রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল